সাত ধরনের ডেভেলপার ব্যক্তিত্ব

কাজ করতে গিয়ে আমি কয়েক ধরনের ব্যক্তির সাথে পরিচিত হয়েছি। কিছু ব্যক্তি রয়েছে যারা হর হামেসা লোক জনের সাথে প্রয়োজন ছাড়া মিশে না । সারা দিন শুধু কাজ আর কাজ। যখন জিজ্ঞাস করবেন কি করছেন ? তখনই বলবে, এই প্রোজেক্ট, ওই প্রোজেক্ট হাতে খাওয়ার সময়টা পর্যন্ত নাই। কয়েক জন আবার হাতে অনেক কাজ রেখে নাক ডেকে দেয় ঘুম। জিজ্ঞাস করলে বলে বান্দরবন ঘুরতে যাব সেই চিন্তায় একটু উত্তেজিত আছি। আবার দু’এক জন আছে যারা এক সাথে চারটা পাঁচটা প্রোজেক্ট শুরু করেন, যখন যেটা ভাল লাগে চলতে থাকে ভাল না লাগলে প্রোজেক্ট বাতিল। ছোট বেলা বারো রকমের মানুষ নাটকটা দেখতাম পড়ায় ফাঁকি দিয়া, আর এখন দেখবো সাত রকমের ডেভরাপারদের কে কি রকম আচরণ করে।

সব সময় আমার লেখার সাথে থাকতে আরএসএস ফিড সাবক্রাইব করুন
ই-মেইলের মাধ্যমে লেখা পেতে এখানে ক্লিক করে আপনার ই-মেইল আইডি দিন

১. চাচা আপন প্রান বাঁচা

সাত ধরনের ডেভলপার ব্যক্তিত্ব

পরীক্ষার হলে প্রশ্ন কমন না পরলে এরকম বন্ধুকে হাজার বার অভিসাপ দিতাম। নিজের সহযোগিতার জন্য যা যা প্রয়োজন তা তা সংগ্রহ করতে ওস্তাদ এরা। কোন সমস্যায় পড়লে ম্যাসেঞ্জারে/ফেইসবুকে অনলাইনে এসে দু’একটা ভাল কথা বলার পরে তার যে জিনিস টা দরকার তার কথা বলবে। তার পরেই লুকিয়ে যায় তারা। গুগলে সার্চ দিয়েও পাওয়া যায় না।

অতিকাংশ সময়ে তারা ওপেনসোর্স সফটওয়্যার, আর বিনামূল্যে পাওয়া টেমপ্লেট আর থিম ব্যবহারে বদ্ধ পরিকর। সারা জীবেনও তারা কোন কিছু কিনে ব্যবহার করবে না এই বেপারে কঠোর সিন্ধান্ত তাদের।

আরেকটা জিনিস তাদের মধ্যে লক্ষনীয় তারা একটি কাজের যে অংশ না পারে তা অন্য কাউকে দিবে না বরং নিজেই করার চেস্টা করবে। আর এজন্যই কিছু কাষ্টমার তাদের কাজের প্রতি খুশি হয় না। তারা প্রায় সব কাজেই নিজেকে পারদর্শী বলে পরিচয় দিতে মজা পায়।

২. অভিজ্ঞ বৃদ্ধ

সাত ধরনের ডেভলপার ব্যক্তিত্ব

সৃষ্টিশীল কাজে এদের আনাগোনা কম হলেও মাঝে মাঝে দেখা মেলে এদের। অনেক বেপারেই মৌলিক ধারনা আছে তাদের। তারা জানে কোথায় কোথায় কোন কোন সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় কোন পন্যের বেপারে ভবিষ্যত বনীও করে বসে । তবে নতুন প্রযুক্তির বেপারে পোলাপাইনেরা যেমন হাউকাউ (আমার এক বন্ধু এই ডোমেইনটা কিনে নিয়েছে) করে, তারা তেমন করে না। তারা সব কিছু একটা অফিসিয়াল নিয়ম মতো করাতে চায়। কোন বিশৃঙ্খ্ল কাজ তারা করতে নারাজ।

তবে অনেকে আমার মতো অতি দৌড় ঝাপ মারা পোলাপাইনের চেয়ে তাদের মতো গম্ভির ব্যক্তিকে কাজ দিতে নিরাপদ বোধ করে। (একটা কথা- তারা কিন্তু বয়েসে কমও হতে পারে বেশিও হতে পারে। কথা আছে- চুল পাকিলে লোকে হয় না বুড়ো )

৩. নাওয়া খাওয়ার সময় নাই যাদের

সাত ধরনের ডেভলপার ব্যক্তিত্ব

কাজটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত একবাড়ে কম্পিউটারের সাথে সুপারগ্লুদিয়ে আটকে থাকে। খাওয়ার সময় হলেও সে দিকে ভ্রক্ষেপ নাই। গোসলের সময় হলেও সে বেপারে উদাসিন। কাজটা শেষ না করলে যেন দেশে ভুমিকম্প হয়ে যাবে এমন একটা ভাব। এরা নিজে যেমন অগোছালো থাকে, টেবিলের সবকিছুও এরকম অগোছালোই থাকে।

৪. পন্ডিত্যমন্য

সাত ধরনের ডেভলপার ব্যক্তিত্ব

আরেকধরনের প্রোগ্রামার আছে যারা নিজেকে পন্ডিত হিসেবে দেখতে ভালবাসে। কোডিং করে খুবই সাবধানে। একটা সেমিকোলন থেকে শুরু করে সব কিছু অতিসয় সাবধানে দেয় । তাদের ভেলিডেশন টেস্টিং সফটওয়্যার (প্রায়) প্রয়োজনই হয় না। তারা সবাইকে বুঝাইতে চেষ্টা করে যে, কোডিং কোন সাধারন বেপার না। অনেক সাবধানে কাজ করা উচিৎ।

তারা এটাতে বিশ্বাস করে যে, এখন কোন ভুল করলে পরে অনেক ঝামেলা হতে পারে। তাই যেটুকু করে সুস্থামতো ভাল ভাবে করার চেস্টা করে। সব সময় নিজেকে অনেক উন্নত কোন ডেভলপারের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেস্টায় অনেক সময় ধীর গতিতেও কাজ করে।

নিজের কিছু আইডিয়া আর চিন্তা চেতনা অন্যের সাথে শেয়ার করে (এবং নিজে ভাবে হয়তো সে আইনস্টাইন হতে যাচ্ছে) এবং এই বেপারে অন্যরা তার সাথে কথা বলুক এটা সে চায়।

৫. কচ্ছপ

সাত ধরনের ডেভলপার ব্যক্তিত্ব

সে আনেকটা কচ্ছবের মতো ধিরে ধিরে তার কাজগুলো করতে থাকে। অন্যান্যদের সাথে যোগাযোগের সময় হাসি ঠাট্টা না করে কাজের কথাটিই বলে। তার অধিনস্তদের সাথে বেশি কথা না বলে সে কাজটি চায়। তার কথা অনেকটা এরকম- “বলার দরকার নেই দেখাও তুমি কি করেছো…

অধিকাংশ সময়ই তার কাজ সঠিক সময়ে শেষ হয়। কাজটি সম্পাদনে গন্ডোগোল হলে অতটা উত্তেজিত হয় না, আবার শেষ হলেও নিজের সুনাম ফুটায় না।

৬. চালাক ডেভেলপার

সাত ধরনের ডেভলপার ব্যক্তিত্ব

নিজের কাজের বিদ্যার চেয়ে এরা মেয়েদের মতো সাজ সজ্জায় ব্যাস্ত বেশি। টাইটা সঠিক ভাবে লগানো হলো কিনা, মাথার চুল উঠে যাচ্ছে নাকি- এ বেপারে সাবধান থাকে তারা। যে কোন ক্লাইন্ট তাদের প্রাথমিক ব্যবহারে খুসি হবে। অভিবাদন ও আপ্পায়নের বেপারে তারা সবসময় সচেতন।

নিজে অতটা বেশি না জানলেও তারা সুপারভাইসিং করতে জানে। কাকে কোথায় কাজ করানো দরকার এ বেপারে তার উপস্থিত বুদ্ধি আছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এরকম লোক ফ্রন্টে রাখার জন্য খুজে বেড়ায়।

৭. প্যারালাল প্রসেসর

সাত ধরনের ডেভলপার ব্যক্তিত্ব

( প্রথমে বলেছিলাম ) এরা এক সাথে আনেকগুলো কাজ হাতে না নিলে মজা পায় না (অনেকটা আমার মতো) । যদিও করার ক্ষমতা সম্পর্কে নিজেই জানে না। যখন যেটা ভাল লাগে সেটা করে। প্রয়োজনের চেয়ে সে তার ইচ্ছাটাকেই প্রয়রিটির প্রধান মাপ কাঠি মনে করে। বেশিরবাগ ক্ষেত্রেই সে ধাপে ধাপে কাজ শেষ না করে মাঝ থেকে কাজ শুরু করে। প্রথম পাতা ডিজাইন শেষ না করে পরের পাতায় হাত দেয়। কিছু অংশের খুত থেকেই যায়। আন্যের সাজেশন ছাড়া সম্পূর্ণ সুন্দর প্রজেক্ট হয়ে ওঠে না।

কোন কাজটি শেষ হয়েছে বা কবে কোন কাজটা শেষ হবে এই প্রশ্নের উত্তর সে জানে না।

আর কোন কোন রকমের ডেভেলপার আপনারা দেখেছেন?

এখানে তো সাত রকমের কথা বললাম । আর কোন ধরনের লোক আপনারা দেখেছেন মতামতে বললে সান্তি পাইতাম। সাবাইকে সাতটা করে ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করছি।

আমার আরও কিছু লেখাঃ

একাধিক মনিটর নিয়ে কাজ করার প্রয়োজনিয় তিনটি সফটওয়্যার
জে-কোয়েরী বনাম ফ্ল্যাশঃ কোনটি পছন্দ করবেন?
ওয়েব ডিজাইনারদের পাঁচটি অপছন্দের বিষয়

Post Idea Taken from Here

9 thoughts on “সাত ধরনের ডেভেলপার ব্যক্তিত্ব”

  1. আমি সাত নম্বরেরটা। এক সাথে অনেকগুলো কাঝ শুরু করি। শেষ করতে পারি না একটাও। কাজের মধ্যে একটা অপূর্ণতা থেকে যায়।

  2. আরে একেবারে আমার মনের কথাটা বইলা ফেললেন? আমার নাম্বার ও তো সাত.. তবে আমার কাজটা একটু উল্টো, আমার অনেকগুলো কাজ একসাথে না থাকলে আমি তেমন একটা কাজ করতে পারিনা। মানে বেশি কাজ দিলে বেশি কাজ করতে পারি। আর কম দিলে খুব ধিরে কাজ করি….।

  3. @ রবিউল ইসলাম: ছবিটাও দারুন , তাই না? আমার ইচ্ছা এরকম অনেকগুলো কম্পু কিনে ঘরে বসে বসে মজা করা। আপনার কি ইচ্ছা?

  4. আমি ৩ নং
    এখন দুপুর ২.২২টা কিন্তু সকাল থেকে পানিও মুখে দেই নাই!!!
    আম্মা হাল ছেড়ে দিয়েছেন………

Leave a Comment