সামুদ্রিক কচ্ছপের জীবনচক্র

দারুন রহস্যঘেরা সামুদ্রিক কচ্ছপের জীবনচক্র।

প্রাপ্ত বয়স্ক হতে পরিবেশ ভেদে তাদের ৭ থেকে ১০ বছর সময় লাগে। নারী ও পুরুষ কচ্ছপ সমুদ্রেই একে অন্যের সাথে মিলিত হয়।

ডিম পারার সময় হলে কচ্ছপ সমুদ্র থেকে তীর বা কোন দ্বিপে আসে, যেখানে সে জন্মেছিল। বালুময় অঞ্চলে নরম মাটি খুরে সেখানে ডিম পারতে থাকে। ঘন্টাখানেকের মধ্যে তার ডিম পারা হয়ে যায়। ১০০ টির মতো ডিম পারে তারা, অবশ্য ৫০/৬০ টির বেশি বাচ্চা হয় না।

মা কচ্ছপ সমুদ্রে চলে যায়, কয়েক বছরের মধ্যে হয়তো আর ফিরবে না। মা কচ্ছপ কখনো জানতে পারবে না তার ডিম ফুটে বাচ্চা হয়েছে। আবার ডিম পারার সময় হলে এই বালুময় তীরে তার দেখা মিলবে।

ডিম থেকে বাচ্চা হতে প্রায় সাত সপ্তাহ সময় লেগে যায়। অবশ্য তাপমাত্রা ও পরিবেশভেদে কম বা বেশি সময় লাগতে পারে। সচেয়ে মজার ব্যাপার তাপমাত্রা বেশি হলে মেয়ে বাচ্চা হয়, আরবাচ্চাটি হবে ছেলে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারনে অধিক মেয়ে হবে সামনের দিনগুলোতে।

ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়ে যায়। বাচ্চারা চাঁদের আলোয় পানির স্রোতে মাধ্যমে সমুদের দিক বুঝতে পারে। তারা এখনো ভাল মতো দেখতে পায় না। প্রথম সমদ্রের যাওয়ার স্বাদ পেয়ে যায়। কিন্তু সেখানেও শার্কসহ বিভিন্ন বড় মাছ তাদের অনেককে খেয়ে ফেলে। অল্প কয়েকটা মাত্র বেচে থাকতে পারে। ধারণা করা হয় ১০০০ বাচ্চার মধ্যে ১টি বাচ্চা বয়স্ক হতে পারে বাকিরা মারা যায়।

ছোট কচ্ছপ প্লাংটন, মাছের ডিম, সামুদ্রিক ঘাস ইত্যাদি খেয়ে বড় হয়ে ওঠে।

সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার, এই ছোট কচ্ছপদের কয়েক বছরের মধ্যে আর খুজে পাওয়া যায় না। তারা খুব শিঘ্র তীরে ফিরে আসে না। বিজ্ঞানীরা এই সময়কে “লস্ট ইয়ার” নামে উল্লেখ করেছে। হয়তো সমুদ্রের কোন এক অঞ্চলে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে।

কচ্ছেপের রয়েছে দিক চেনার ক্ষমতা যা দিয়ে আবার সে তীরে আসতে পারে যেখানে সে জন্মেছিল। অক্সিজেন গ্রহণ করতে তাকে মাঝে মাঝে সমুদ্রের উপরের দিকে আসতে হয়।

বিজ্ঞানীরা কচ্ছপের সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়ে বেশ চিন্তিত। অনেক খামারীরা তীর থেকে কচ্ছপের ডিম চুরি করে নেয়। কচ্ছপের মাংসের চাহিদা রয়েছে। আবার তাদের শরীরের শক্ত খোলস দিয়ে দামি দামি জিনিস তৈরী হয়। এখন অনেক খামারেও কচ্ছপ চাষ হচ্ছে। হাজার কোটি টাকার ইনডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে।

আল্লাহর এত সুন্দর সৃষ্টি ভাল থাকুক। আর আপনিও ভাল থাকবেন, সেই সাথে চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। আল্লাহ হাফেজ।

Leave a Comment