দ্রুত দৌড়ানো ব্লগারের কাজ নয়

ইদানিং এফ এম রেডিও তে অনেকেই কান খোলা রাখেন। বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের সম্পচার সুনে আমি হতবাক। ওরা ইদানিং একটা ভংগিমায় কথা বলে যা দিয়ে তারা বুঝতে চায় যে ওরা মডার্ণ ছেলে-মেয়েদের জন্য দৌড়াচ্ছে। কথা খুবদ্রুত বলে যায় আর তাতে বাংলা শব্দগুলো বিকৃত হয় আর ইংরেজী শব্দগুলো হয় আরও অনর্থবোধক।

কিছু ছেলে মেয়েকে চলাফেরাতে একটা ভাব ও দ্রুততা বজায় রাখতে দেখি-এটা সুন্দর। কিন্তু কয়েকজন আবার তাদের অনুকরণ করতে গিয়ে আরও বেশি সাজগোজ আরও দ্রুত হাত নেড়ে কথা বলা আর চলাফেরায় উগ্রতা এনে নিজেকে স্মার্ট করে তোলার একটা অসন্তোসজনক চেষ্টা করে থাকে।

কেউ কেউ শুধু দরকারী কথাটাই তার ব্লগে লিখে যান। বিশেষতঃ খবর বা টিউটরিয়াল ধরনের লেখায় মূল বিষয় ছাড়া কিছু লেখার প্রয়োজন আছে বলে অনেকে মনে করেন না। কেউ কেউ শুধু দরকারী কথাটা এত সঙ্খেপিত করে লিখেন যে তা বুঝে উঠতে কষ্ট হয়।

এবার আমি আমার কিছু কথা বলি। আমি নিজে খুব ধিরে চরা ফেরা করি। অনেক বৃদ্ধ ও মেয়েরাও রাস্তা দিয়ে আমার চেয়ে দ্রুত হেটে চলে যায়। কিছু কিছু জায়গায় আমি একা একা হাটতে পছন্দ করি। নিজের মনে। ‌কাজ করার সময় অনেকেই আমার চেয়ে দ্রুত কোন কোন কাজ করে ফেলে। আমি অনেক কাজই পরে করার জন্য জমিয়ে রাখি। আমি একটা লুজার-বলতে পারেন। আমি খুব ভাল পোষাকও পরি না, গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে বিশেষ পোষাকের দিকেও নজর নেই। খাওয়া দাওয়াতে অনিহা। স্বাস্থ্য একেবারে দুর্বল। অনেক বেশি অগোছালো। আমি অনেক বেশি আনস্মার্ট ছেলে-এটা সবাই জানে।

প্রথম দেখায় আমাকে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলে না কেউ, আমিও প্রথম দেখায় কাউকে গুরুত্ব দেই না। আমার সাথে পরিচয় হওয়ার পর খুব কম কথা বলি ও যদি মনে হয় তার সাথে কথা বলা দরকার ও তাকে ভাল লাগে তখন তার সাথে একটু বেশি কথা বলি। তারপর থেকে আমাকে একটু একটু করে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করে। বেশ কিছু লোকের সাথে আমি কাজ করেছি যারা আমাকে অনেক পরে চিনতে পেরেছে এবং এখন নিয়মিত আমার ভক্ত হয়ে গেছে। অনেক স্মার্ট ছেলেদের চেয়ে আমি বেশি স্মার্ট-এটা মনে করে।

বেপারটাতে একটা ঝামেলার বিষয় আছে- কথা বলার সময়, কাজ করার সময়, সিদ্ধান্ত দেওয়ার সময়, উপদেশ দেওয়ার সময় একটু চিন্তা ভাবনা করে সঠিক কথাটি কি বলা হলো কিনা; কোন একটি বিষয়ে মন্তব্য করার সময় কি সঠিক মতামত টি দিলেন কিনা? আড্ডা, গল্প করার সময় কি একটু মাজা করে বা উদাহরন টেনে বিষয়টিকে পরিষ্কার করে বললেন কিনা? নাকি গোজামিল দিয়ে এড়িয়ে গেলেন? – এটা থেকেই স্মার্টনেসের একটা বড় পরিচয় খুজে পাবেন।

ব্লগারদের মধ্যে অনেকে খুবই দ্রুত গতিতে পোষ্ট লিখে ছাপিয়ে ফেলছে। কথাগুলোর একটা আরেকটার কাধে কাধ মিলিয়ে আছে। পোষ্টের পর পোষ্ট দেওয়ার আর “ধন্যবাদ” সুচক মতামতে ভরপুর। কিন্তু ব্লগারকে এত দ্রুত গতিতে পোষ্ট প্রকাশ করতে গিয়ে নিজস্বতা হারাতে পারেন। এক জন ব্লগার দৌড়াবেন না, বসে থাকবেন কিন্তু এগিয়ে যাবেন অনেক দূর।

5 thoughts on “দ্রুত দৌড়ানো ব্লগারের কাজ নয়”

  1. আপনার সাথে সহমত, দ্রুত কাজ করা বা দিনে ৩-৪টার বেশি পোস্ট করা একজন ব্লগারের জন্য শোভনীয় নয়, এতে অনেকের কাছে পরিচিতি পাওয়া গেলেও সুনাম কখোনোই লাভ করা যায় না, আপনার পোস্টগুলো আমার কাছে বেশ ভালই মনে হয়, বিশেষ করে আপনার টিপসগুলো, যদিও বয়স অনেক কম, তারপরো আপনার টিপ্সগুলো সত্যি আমার বেশ কাজে আসছে।

    1. @ডিজে আরিফ, দিনে ৪.৫ টা পোষ্ট লেখা বড় কথা না , ওই পোষ্টগুলী পাঠক বুঝতে পারলো কিনা বা উপকৃত হলো কিনা সেইটাই বড় কথা। ধন্যবাদ , মাহবুব ভাইকে সুন্দর একটি পোষ্ট উপহার দেবার জন্য। আমি নিজেও এই কাজটা অনেক সময় করি , কখনো মন ভালো না থাকলে , বা কোন বিয়য়ে উদ্মিগ্ন থাকলে পোষ্ট খুব ছোট করে ফেলি বা পূর্ণ বর্ণনা করি না। এখন থেকে মানার চেষ্টা করব। আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি ব্যতিক্রমি পোষ্ট দেবার জন্য।

  2. মতামত দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আরিফ, আরএম ও তুসিন। সত্যিকার অর্থে বেপারটা এরকম যে, ধিরে কাজ করেও অনেক দ্রুত এগিয়ে যাওয়া যায়। আবার অনেক দ্রুত কাজ করেও পেছনে পরে থাকতে হতে পারে। অনেকে বছরের পর বছর কাজ করেও এগিয়ে যেতে পারে না। আবার অনেকে সৃজনশীল এক দুইটা কাজ করেও সফলতা অর্জন করেছেন। সৃজনশীলতার বেপারে কিছু দিনের মধ্যেই আরেকটা পোষ্ট দিবো…সাথে থাকুন, ধন্যবাদ।

Leave a Comment