সিজনাল খাবার খাওয়ার সাত উপকারিতা

দিন ও রাতের ব্যবধানের সাথে এবং তাপমাত্রার সাথে উদ্ভিদের ফুল ও ফল দেওয়ার চক্র নির্ধারিত করে রেখেছেন আল্লাহ। আর তাই আমরা এক এক সময় এক এক শাক, সব্জি, ফল-মূল ও ফসল পেয়ে থাকি।

এটা যেমন আমাদের জীবে বৈচিত্র নিয়ে আসে তেমনি একটা খাবারের অএনক প্রাপ্তিতে কিছুটা হলেও খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের প্রয়োজনীয়তা মিটে যায়। আমাদের উচিৎ সিজনাল এবং এলাকার যেসব শাক, শব্জি এবং ফল-মূল পাওয়া যায় তার সবই খাওয়া। কোনটাকে বাদ না দিয়েই বছরটা ঘুরানো।

Image by Cynthia Lam from Pixabay

১. প্রাকৃতিকভাবে শরীরের চাহিদা পূরণঃ

গরমের দিনে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবণা থাকে। আর দেখুন এই সময়ই পাওয়া যায় আম, যা আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখে। কাচা আম ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে। এভাবে প্রতিটা সিজনে যে ফল পাওয়া যায় তা আমাদের ঐ সিজনেরই প্রয়োজনীয়।

[tutosubscribe]

আবার দেশি অনেক ফল আছে যা বাজারে হয়তো পাওয়াই যায় না তাও বাদ দেওয়ার না। কাউফল, বেথুইন, গাব, লটকন, জাম ইত্যাদি আমাদের দেশে খুব কম সময়ই পাওয়া যায়।

Image by Cris Ramos from Pixabay

২. সারা বছরের চাহিদা পূরণ

সারা বছর আমাদের শরীরের কিছু ভিটামিন, মিনারেলের অভাবকে আমরা সিজনাল ফল ও শাক-সব্জির মাধ্যমে পূরণ করতে পারি। আমাদের শরীর তার প্রয়োজনীয়তা বুঝে গ্রহণ করে নেয়। বাড়তিটা শরীর থেকে বেড়িয়ে যায়।

Image by OpenClipart-Vectors from Pixabay

৩. সিজনাল ফল ক্যামিক্যাল মুক্ত

সিজনাল ফল সংরক্ষণের প্রয়োজন না হওয়ায় এটি হিমাগারে রাখা হয় না। সাধারনতঃ ফলের আবরণে মোম বা ফরমালিন জাতীয় প্রিজারভেটিভও ব্যবহার হয় না। আর এলাকার আস-পাস থেকে সংগ্রহ করলে আরো ভালো।

[tutoadsense]

কোন একটি ফল কয়েক মাস সংরক্ষণ করে অফসিজনে বিক্রি করতে পারলে অনেক লাভ। তাই ব্যাবসায়ীরা ফল সংরক্ষণ করে বিক্রি করে। হিমাগারে রাখলে বা ক্যামিক্যাল দিয়ে রাখলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভালর চেয়ে খারাপ বয়ে আনবে।

বাংলাদেশের ডাক্তাররা ইদানিং রোগিকে ফল খেতে না করেন-কারন বাজারে যে সব বিদেশি ফল পাওয়া যায় তার সবই ক্যামিক্যাল দেওয়া।

Image by RitaE from Pixabay

৪. সিজনাল তারকারীর অধিকাংশই আসল জাতের

জাত উন্নয়ণ করে উচ্চ ফলনশীল করা হয়েছে অনেক শব্জি এবং ফসল। আবার কোন কোন ফসল যে সিজনে চাষ হতো তাও পরিবর্তন করা হয়েছে জীন পরিবর্তনের মাধ্যমে। জীন পরিবর্তিত অনেক ফসলেই আসল জাতের চেয়ে কম পুষ্টিগুণ সম্পন্ন প্রমান পাওয়া গেছে।

আর তাই আসল জাতের তরকারী পেতে সেই সিজনেই খেতে হবে। বাংলাদেশে এখন অনেক শাক সারা বছর ফলে যেমন পুই শাক, লাল শাক ইত্যাদি। অন্যান্য তরকারী যেমন-লাউ, মিষ্টি কুমড়া, সিম, টমেটো, গাজর ইত্যাদি নির্দিষ্ট সময়ে ফলে। নকল জাতের তরকারী দেখবেন একটু ভিন্ন সিজনেও পাবেন।

Image by Yerson Retamal from Pixabay

৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

শাক সব্জি ও ফল-মূল রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। সিজনাল এক একটা খাবারে এক এক ধরনের গুণাগুন রয়েছে।

শরীরের চাহিদামতো শরীর খাবার গ্রহণ করে। কোন খাবার নিয়মিত বেশি খেলে সেই খাবারের সব পুষ্টি শরীর গ্রহণ করে না। তাই খাবারের ভিন্নতা শরীরের পুষ্টির চাহিদা পুরণ করে। আর প্রয়োজনীয় পুষ্টির সঠিক পরিমান আমাদের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

[tutoadsense]

৬. কখনোই পাওয়া যাবে না এমন নিউট্রেশন

এমন কিছু নিউট্রেশন যা অন্য সময় পাওয়া যাবে না তা এখন গ্রহণ করা উচিৎ। কোন কোন সিজনাল শব্জি বা ফল মেনু থেকে বাদ দিয়ে গেলে সারা বছর সেই পুষ্টির খাবার হয়তো অনুপস্থিত থাকবে। তাই যখন বাজারে যে ফল ও শব্জি ওঠে তাকে গুরুত্ব দিন।

৭. স্বাদ

খাবারের ভিন্নতা একঘেয়ামীও দূর হয়। মানুষের মনে তৃপ্তি আনে, ভাল লাগে। মানুষিক প্রশান্তির জন্য খাবারের ভিন্নতা প্রয়োজন। কিছু খাবার বিষন্নতা বিরোধী হরমোন বৃ্দ্ধি করে মন ভাল রাখে।

এছাড়াও

  • ১. দাম কম হওয়ায় আপনি অনেক নিউট্রেশন কম দামে পেয়ে যাবেন। বাংলাদেশে টমেটো, গাজর, শসা ইত্যাদির দাম সিজনের তুলনায় অফ সিজনে দশগুন পর্যন্ত হয়। বিভিন্ন ফলের দাম পাঁচগুন পর্যন্ত হতে দেখি।
  • ২. সিজনে কৃষক প্রচুর ফসল হয়, ক্রেতা পাওয়া যায় না। অনেক ফল ও ফসল অপচয় হয়। আমরা সিজনের সময় খাবারগুলো বেশি গ্রহণ করলে খাদ্য অপচয় কমবে, কৃষকের উপকার করা হবে।
Image by Aline Ponce from Pixabay

সাবধানতাঃ

  • একই ফল প্রচুর খাওয়ায় ফুড পয়জন হওয়ার সম্ভবনা থাকে। খালি পেটে প্রচুর পরিমানে জাম, লিচু ও কাঠাল খেয়ে অনেকেরই ফুড পয়জন হয়েছে।
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। রাতের বেলা গাছের নিচে প্রচুর পরিমান ফল পরে থাকে, বচ্চারা সকালে গিয়ে তোলে এবং খায়। সকালে অতিরিক্ত লিচু খাওয়ার ফল ফুড পয়জন হয়েছে-এমন প্রমান আছে।

শিক্ষণ লিংকঃ

https://www.femalefirst.co.uk/foodanddrink/10-benefits-of-eating-seasonally-1148144.html

https://gulfnews.com/uae/health/benefits-of-seasonal-foods-1.1414035

Leave a Comment