প্রকৃতিতে অনেক প্রজাতির শিকারী প্রাণী রয়েছে। একেক প্রাণী শিকারে একেক কৌশল প্রয়োগ করে। কেউ বা সরাসরি
আক্রমণ করে কেউ বা নীরবে ঘায়েল করে হত্যা করে । নীরবে আক্রমণ করে এমন ২ টি বিচিত্র প্রাণি সম্পর্কে জানুন
নিচে-
কমডো ড্রাগন
কমডো ড্রাগন (Varanus komodoensis)একটি সরীসৃপ প্রাণী যাদেরকে ইন্দোনেশিয়ার গ্রীষ্মপ্রধান
অঞ্চলের বাস করতে দেখা যায়। এরা টিকটিকি প্রজাতিভুক্ত বিশাল আকারের প্রানী। দৈর্ঘ্যে ১০ ফুট (৩ মিটার) লম্বা
এবং ওজনে ২০০ পাউন্ড(৭০ কেজি) হয়ে থাকে। এদের গায়ের চামড়া রুক্ষ,খসখসে যা অনেকটা কুমিরের মত, মুখ
সরু, এবং একটি দীর্ঘ পুচ্ছ আছে। এদের তীক্ষ্ণ লম্বা নখ রয়েছে। এদের পায়ের পাতা আমাদের হাতের তালুর অনুরূপ।
কমডো ড্রাগনের দাঁত দেখতে অনেকটা করাতের মত দেখতে। বছরে এদের ২০০ টা দাঁত গজায়। এদের দুটি কানের
ছিদ্র থাকে তবে এরা কানে বধির। নাসারন্ধ্র ও জিহ্বা ব্যবহার করে এরা শিকারের গন্ধ শুঁকে নেয়। এরা ৫ মাইল দূর
থেকেও শিকারের গন্ধ পেয়ে থাকে। এভাবে গন্ধ শুঁকে শুঁকে শিকারের সন্ধান করে। এদের দৌড়ের গতিবেগও কম নয়।
ঘন্টায় ৫ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে পারে।
তাদের লালায় ৪০ ধরণের ব্যাকটেরিয়া এবং একটি এন্টি-কগুলান্ট (anti-coagulant একটি পদার্থ যা
রক্তের তরল পদার্থের চাপ থেকে রক্তকে রক্ষা করে) রয়েছে। শিকারী প্রাণীকে যখন এরা কামড়ে দেয় তখন শিকারিদের
শরীরে রক্তপাত শুরু হয় ধীরে ধীরে এটি মারা যায় মুলতঃ এন্টি-কগুলান্ট এর কারনে। তখন কমডো ড্রাগন এদেরকে
খাওয়া শুরু করে।
এরা ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বেঁচে থাকে।
হাগফিস
হাগফিস(myxine glutinosa)- প্রকৃতির আর এক নীরব ঘাতক।
হাগফিস eel-আকৃতিবিশিষ্ট প্রাণী। এরা লম্বায় ৩২ ইঞ্চি হতে পারে। এদের শরীর স্লাইম নামক একটি চটচটে
আঠালো পদার্থ দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে। এই স্লাইম নামক আঠালো পদার্থ ক্ষুদ্র আঁশের সঙ্গে শক্তিশালীভাবে যুক্ত। ফলে
স্লাইম এত বেশি শক্ত এবং কঠিন হয় যে তা সহজে মুছে ফেলা যায়না। শিকার শ্বাসরোধে সহজে মারা যাবে যদি
আঠালো পদার্থ এটির ফুল্কার মধ্যে প্রবেশ করে।
এরা নিজেরা এই আঠালো পদার্থ বা স্লাইম থেকে বাঁচতে একটা কুন্ডলীর মধ্যে নিজেকে পেঁচিয়ে রাখে এবং এভাবে পথ
অতিক্রম করে যাতে দেহের স্লাইম মুছে নিতে পারে। হাগফিসের খাওয়ার অভ্যাস ভয়ঙ্কর ধরণের । এটি পাশ দিয়ে
অতিক্রান্ত মাছকে এই আঠালো পদার্থ বা স্লাইম এর সাহায্যে আটকে ফেলে এদের বিশেষ ধরণের জিহবার সাহায্যে
মাংস ভক্ষণ করে । এদেরকে সমুদ্রের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণী মনে করা হয়।