বিচিত্র ও আকর্ষনীয় প্রজাতির ১০টি কুমির

পৃথিবীতে কুমিরের ২৩ টি প্রজাতি রয়েছে। কুমির সম্পর্কে সচরাচর আমাদের যে ধারণা তা হল সব ধরণের কুমিরই তো একই রকম দেখতে! অর্থাৎ তাদের বড় মাথা, লম্বা চোয়াল থাকবে, খাটো লেজ এবং অনেকগুলো দাঁত থাকবে এইতো! তাতে আর ব্যতিক্রম কি?
নিচে এমন ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ১০টি কুমির সম্পর্কে লেখা হলোঃ

কিউবান কুমির


এদেরকে কিউবা এবং কিউবার Isla de la Juventud তে কেবল দেখতে পাওয়া যায় । এই ধরণের কুমির আজকাল বিপন্ন হতে চলেছে। ৩ মিটার (৯.৮৪’) দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এই কুমির সত্যিই ব্যতিক্রম কুমিরের অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় এদের দৈর্ঘ্য ও কম।এরা খুবই দুষ্প্রাপ্য প্রজাতির বিধায় একটা পরিধির মধ্যে তাদের চলাচল সীমাবদ্ধ। এরা তাই মানুষকে খুব একটা আক্রমন করে না যদিও এরা কম বিপজ্জনক নয়। এদের রক্ষকদের রিপোর্ট মতে, এরা দলবদ্ধ হয়ে ঘুরে বেড়ায় শিকারের সন্ধানে। বড় ধরণের শিকার মানুষসহ বশে আনা তেমন কোন ব্যাপার না এদের জন্য।

আফ্রিকার বামন বা খুদ্রাকৃতির কুমির


পশ্চিম এবং কেন্দ্রীয় আফ্রিকার  ট্রপিক্যাল নদী এবং জলাশয়ে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা লম্বায় মাত্র ১.৫ মিটার! কদাচিৎ ১.৮ মিটার লম্বা হতে দেখা যায়। তাই এদের নাম বামন কুমির।
এরা একটু লাজুক প্রকৃতির শিকারী প্রানী। সচরাচর পোকা, ব্যাঙ, মাছ এবং ক্ষুদ্র আকারের মাংসাশী, যা পায় তাই খায়। এরা মানুষের জন্য বিপজ্জনক নয় যদি না এদেরকে বেশি না ঘাটায়। মজার ব্যাপার হল এদের অন্য সকল কুমিরের মত কোন দাঁড় নেই ।

সরু শুড়ীবিশিষ্ট কুমির


সরু শুড়ীবিশিষ্ট কুমির ট্রপিক্যাল আফ্রিকার রেইন ফরেস্ট অঞ্ছলে এদের দেখতে পাওয়া যায় ।বামন কুমিরের তুলনায় এরা অনেক বড়। দৈর্ঘে এরা ৪ মিটার বা ১৩.১’ লম্বা হয়।সাধারনত বেশির ভাগই মাছ খায় তবে লাল মাংস হজম করতে পারার ক্ষমতা আছে । দৈনিক এক কেজি মাংসই যথেষ্ট তাদের খুশি রাখার জন্য। অন্য সকল কুমির প্রজাতির মত এরা কয়েকদিন এমন কি এক সপ্তাহও না খেয়ে থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা এদেরকে বিপজ্জকনক প্রানী হসেবে গননা করেনা তারপর ও এদেরকে বিরক্ত করলে বা এদের বাসস্থানে হামলা চালালে এরা মানুষের উপরও হামলা করে।

ফলস গরিয়াল


দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ায় বিশেষ করে মালেশিয়া, বরনিওতে এদেরকে দেখতে পাওয়া যায়। এরা ৬-৭ মিটার বা ১৯।৬’-২২।৯’ লম্বা হয় । এদেরকে ভুয়া গরিয়াল বলা হয় কারন এদের পাতলা নাক দেখতে অনেকতা গরিয়ালের মত, যা ভারতে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এদের চোয়াল অনেক চওড়া হওয়ায় এরা বড় যেমন হরিণ, শুকর, বানর ইত্যাদি বন্য প্রাণীও শিকার করতে পারে । তবে এরা কদাচিৎ মানুষকে আক্রমন করে

ইয়াকার


পিরানহা ইয়াকারও বলা হয় ইয়াকার কুমিরকে। “কেয়মান” গ্রুপের এই সদস্যকে দক্ষিণ আমেরিকায় দেখা যায়। পিরানহা এদের প্রিয় শিকার তাই এদেরকে পিরানহা ইয়াকার বলা হয়।তাছাড়া পিরানহার মত এদের নিচের চোয়ালে প্রসারিত দাঁত রয়েছে। পিরানহার পাশাপাশি এরা মাছ পাখি, ছোট স্থন্যপায়ী এবং কারিওন ও খায়। কুমির প্রজাতির মধ্যে এরাই সবচেয়ে সমৃদ্ধ বলা যায় সংখ্যার দিক দিয়ে। ধারণা করা হচ্ছে ১০০,০০০-২০০,০০০টি কুমির শিধুমাত্র ব্রাজিল, বলিভিয়া এবং আর্জেন্টিনার জলা এবং জলভূমিতে রয়েছে।তবে এরা আকারে অন্যদের চেয়ে ছোট। দৈর্ঘ্যে ২ মিটার কদাচিৎ ২.৫ মিটার হয়।

চশমা পরা কুমির


চশমা পরা কুমির পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র বিচরন করে।সংখ্যায় এরা মিলিয়নসংখ্যক । এই প্রজাতির কুমির গায়ের ত্বক পরিবর্তন করতে পারে যদিও সচরাচর তা করেনা। এদের চোখের উভয় পাশের উচু হাড় থাকার ফলে এদেরকে দেখতে অনেকটা চশমা পরেছে বলে মনে হয়। এরা লম্বায় ৩ মিটার পর্যন্ত হয়।

বামন কুমির


এদের ২তি প্রজাতিই আছে । এরা লম্বায় ২ মিটার মত হলেও এদের চোখ বড় বড় হয়। এরা ভয়ংকর নয়। বিচিত্র ধরণের প্রানী পোষার ক্ষেত্রে এরা   অনেক পছন্দের। তবে খুব ভাল পোষ মানে না । অন্য সকল কুমিরের মত এদের শক্তিশালী চোয়াল এবং দাঁত  রয়েছে ।যদিও সাইজে ছোট কিন্তু মানুসের গায়ের চামড়া খুব সহজে ছিলে নিতে পারবে এরা । আঘাত করে দ্রুত বিষ ছরিয়ে দিতে পারবে শরীরে। সাধারনত ছোট ছোট প্রানী শিকার করে খেয়ে জীবন ধারন করে থাকে ।

চীনা কুমির


চীনা কুমির দৈর্ঘ্যে ১.৫ মিটার হয় । সচরাচর মলাস্কা পর্বের প্রাণী খেয়ে থাকে।  তবে এদের আরেক প্রজাতি আমেরিকান কুমির ৫ মিটার লম্বা হয়। খুবই আক্রমণাত্মক ধরণের। এরা মানুষকে গোগ্রাসে গিলতে পারে।চীনা কুমির অনেক বিপদাপন্ন প্রানী যাদের সংখ্যা খুবই স্বল্প সংখ্যক তাও বিলুপ্তির পথে।

স্বাদু পানির কুমির


অস্ত্রেলিয়ার স্বাদু পানির কুমিরের অন্য সকল প্রজাতির ক্কুমিরে রমত লম্বা সিলিন্ডার নাক রয়েছে । ের সাহাজ্যে এরা মাছ ধরে । এরা সয়াধারনত খুব সান্ত স্বভাবের হয় তবে যখন মানুষ এদের বাসস্থান কিংবা এলাকাতে ক্ষতি করে তখন এরা মানুষকে কামড়ায়। এদের ক্ষিপ্রতার জন্য সবাই এদেরকে কুখ্যাতরূপে জানে । এরা দ্রুত দৌড়াতে পারে। ঘণ্টায় ১৮ কিমি বেগে দৌড়াতে পারে যা একজন স্বাস্থ্যবান মানুশের কাছাকাছি ২৪ কিমি / ঘণ্টা । এরা ৩ থেকে ৪ মিটার লম্বা হয়
গরিয়াল


গরিয়াল যে সকল কুমির প্রজাতির মধ্যে বিচিত্র তাতে কোন সন্দেহ নেই। দৈর্ঘ্যে এরা সবচেয়ে লম্বা হয় এবং তাদের নাক ও অন্যান্যদের তুলনায় লম্বা। মাছ শিকার করে । অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় এরা অনেক বেশি পানিতে থাকে । এদের লেজ খুব খাটো এবং দুর্বল । রোদ পোহানোর জন্য এবং ডিম পারার জন্য ছাড়া র কোন কারনে এরা দাঙ্গায় আসে না । ভারত এবং নেপালে এদের বিহত্তর প্রজাতি দেখা যায় । এরা মানুষের  কোন ক্ষতি ক্রএ না পারত পক্ষে। দুর্ভাগ্যবশতঃ নগরায়নের ফলে প্রায় ১৫০০ গরিয়াল বিলুপ্তির পথে আজ।

1 thought on “বিচিত্র ও আকর্ষনীয় প্রজাতির ১০টি কুমির”

  1. Wow, marvelous blog layout! How long have you been blogging for? you make blogging look easy. The overall look of your web site is magnificent, as well as the content!. Thanks For Your article about বিচিত্র ও আকর্ষনীয় প্রজাতির ১০টি কুমির | টিউটোরিয়ালবিডি .

Leave a Comment