আমাদের মস্তিস্ক আমাদের জন্য সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। যা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে যাওয়া সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার মূহর্ত গুলোকে ভিডিও ক্যামেরার মত সংরক্ষণ করে রাখে। আবার আমরা চাইলেই মনের মুক্ত ক্যানভাসে মূহর্ত গুলোকে ফিরিয়ে আনতে পারি আর এই প্রক্রিয়াটিই হচ্ছে স্মৃতিচারণ।
আমার এক বন্ধু, তার নামটা এখন আমার ঠিক মনে নেই, সে ভাল কবিতা লিখতে পারত, দু একদিন আমাকেও পড়ে শুনিয়েছে। তার নিজের লেখা কোন একটা কবিতার দুটো লাইন হঠাৎ মনে পরে গেলো……..
“স্মৃতি তুমি গুপ্ত মনে সুপ্ত ব্যাথার সাড়া
ফেলে আসা দিন গুলোকে বাড়ে বাড়ে দাও নাড়া”
আসলে ঠিক তাই, ফেলে আসা দিনের মধুর স্মৃতি গুলোকে মনে করে আমরা অনন্দ পাই, আবার দুঃখের স্মৃতি গুলোও মাঝে মাঝে আমাদের নাড়া দিয়ে যায়, ব্যাথিত করে মনকে।
আমরা দুজন একই সাথে HSC তে একই কলেজে পড়েছিলাম, সে এখন ঠিক কোথায় আছে কি করছে তা আমার জানা নেই। আবার আমার বিষয়েও সে কিছু জানে না অর্থাৎ তার সাথে আমার আবার পূণমিলনের সম্ভাবনা আছে মাত্র কয়েকটা পদ্ধতিতে।
- যদি কখোনো আমাদের দেখা হয় এবং সে আমাকে দেখে চিনতে পারে।
- যদি কখোনো আমাদের দেখা হয় এবং তাকে দেখার পর তার চেহারা আমার মনে পড়ে ।
- আমরা দুজনেই যদি কোনভাবে আমাদের জীবনের গল্প এবং বর্তমান ঠিকানা বা যোগাযোগের মাধ্যম খুঁজে পাই।
- তৃতীয় কোন বন্ধু বা ব্যাক্তি যিনি আমাদের সম্পর্কে জানেন এবং আমাদেরকে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেন।
আসলে সবকিছুই অনুশীলনের বিষয় । আমাদের মস্তিস্কও তার ব্যাতিক্রম নয়। আমরা প্রতি মূহর্ত পার করছি নতুন নতুন অসংখ্য ঘটনার মধ্যদিয়ে । আর আমাদের মস্তিস্ক্ও এগুলোকে সংরক্ষণ করার চেষ্টা করছে। সকল ঘটনাই যে সমান ভাবে আমাদের মনে থাকবে এমনটাও ঘটে না।
কালের আবর্তন, ঘটনা সংঘটনের সময়, ঘটনা সংঘটনের স্থান এবং ব্যাপ্তি, একই ধরণের অন্যান্য ঘটনা, আপনার স্মৃতিচারণ, নিয়মিত যোগাযোগ, বিশেষ কোন উপলক্ষ, লিখিত বিবরণ ইত্যাদি বিষয় গুলো আমাদের মস্তিস্ককে প্রভাবিত করে। ঠিক যেমনটা ঘটেছে আমার আর আমার বন্ধুটির ক্ষেত্রে। একটু পর্যবেক্ষণ করা যাক ঠিক কি কি বিষয় আমাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছে।
- দীর্ঘদিন আমাদের যোগাযোগ নেই।
- আমরা যে একসাথে অনেক ঘণিষ্ঠ ভাবে মিশেছিলাম এমনটিও ছিলনা, আর্থাৎ ঘটনার ব্যাপ্তিও কম ছিল।
- বেশ অনেকটা সময় কলেজে যাওয়া হয়নি অর্থাৎ দীর্ঘসময় ঘটনা সংগঠনের স্থানের সাথে কোন সম্পর্ক ছিলনা।
- আমার ডায়রীতে তার সম্পর্কে কিছু লেখা নেই, অর্থাৎ আমি যখন ডায়রীতে লিখি তখন আমার তার বিষয়ে স্মৃতিচারণ করার সুযোগ ছিলোনা।
- আজ আমার তার কথা মনে পড়ার ক্ষেত্রে , কবিতার লাইন দুটো বিশেষ উপলক্ষ হিসেবে কাজ করেছে।
দুটি কথা:
ডায়রী লেখাটা অনেকের শখের বিষয় হলেও এটা আমাদের মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা বর্ধনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া জীবনে এমন সময় আসতে পারে আপনার নিজের হাতে লেখা ডায়েরীটা অনেক মূল্যবান হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য অথবা অন্যকারো জন্য।
……………………………………………………………………………..
আজ এ পর্যন্ত্ই। সবার জন্য শুভ কামনা রইল।
অনেক মূল্যবান কথাগুলো!!! 🙂
ami aponar ata copy korlam… darun laglo aponar post ta. thanks too you.