অনলাইনে প্রশিক্ষণের পদ্ধতিকে সহজিকরণ

অনেকেই বাংলা – ইরেজী ব্লগ পরে, ওয়েবে বুঝে না জুঝে ঘোরাফেরা করে। নতুনরা মূলতঃ ওয়েবে বিনোদন খুজে বেড়ায়। প্রফেশনালরা যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তবে এখন সময়টা একটু অন্যরকম। বাংলাদেশের ছেলেরা পড়ালেখা করে কর্মসংস্থানের নিশ্চিত ব্যবস্থা হবে না-এটা জেনে গেছে। আর তাদের মধ্যে যারা শুনেছে অনলাইনে আয় করা যায় তাও আবার ঘরে বসে তারা কিন্তু আয়ের জন্য উঠে পরে লাগে। অথচ মূল পথটাই খুজে পেতে অনেক সময় লেগে যায়। সব জায়গায়ই আয়ের উৎস হলো প্রশিক্ষণ। আর এই প্রশিক্ষণ না নিয়ে দিন রাত ফ্রিলান্সিং এর প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হবে।

অনলাইনে প্রশিক্ষণের পদ্ধতিকে সহজিকরণ

আমি নিজে এখনো নিজেকে অনলাইনে আয়ের জন্য উপযুক্ত বলে এখনো মনে করতে পারি না। তবে নিজে নিজে শেখার ক্ষমতা অর্জন করেছি। অধিকাংশ লোকই অনলাইনে নিজের প্রয়োজনীয় বিষয়টি খুজে বের করে শিখার ধারায় নিয়ে আসতে পারে না। আমি তাই অনেক আগেই অনলাইন প্রশিক্ষণের বাঁধাসমুহ নিয়ে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলাম। শেখানে আমি চারটি বিষয়ের কথা উচ্চারণ করেছিলাম যার কারনে অনলাইনে প্রশিক্ষণ নিতে সমস্যা হয়। আর এই বাধা সমুহকে দূর করে এগিয়ে যেতে পারলেই সহজে নিজেকে গড়ে তোলা যাবে।

  • ১. কোন জিনিসটা শিখা দরকার সেটা সম্পর্কে অজ্ঞতা
  • ২. ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয় না, ফলে অনেক কিছু শিখাই বাদ পরে যায়
  • ৩. নিজের ইচ্ছায় টপিক পছন্দ করা এবং তা থেকে সহজে বিদায় নেওয়া।
  • ৪. সহজে সমাধান না পাওয়া বা অনুসন্ধান করে তথ্য উদ্ধারের অযোগ্যতা

আমি সহজ কয়েকটি পদ্ধতির কথা বলবো যার মাধ্যমে নতুনরা তাদের প্রয়োজনীয় বিষয় শিখে নিতে পারে।

উপযুক্ততা যাচাইঃ

প্রতিটি মানুষের ইচ্ছা আকাংখা ও সৃজনশীলতা অন্যের চেয়ে ভিন্ন। কারো কাছে অনেক হৈচৈ ভাল লাগে আবার কারো কাছে নিরব পরিবেশ প্রিয়। আপনি চাইলে অনেক কিছু করতে পারবেন, নিজেকেউ পরিবর্তণ করে নিতে পারবেন। তবে নিজের ভেতরের সব কিছুকে পরিবর্তণ করে চলা কখনোই সম্ভব না। আর আপনি কোন বিষয়টি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন সেটা আপনাকেই নির্ধারণ করতে হবে। আপনি কি আর্টিকেল লিখতে পারেন? ভাল ইংরেজী আর্টিকেল লিখতে পারলে অবশ্যই এডসেন্সে ভাল একটি আয় করতে পারবেন। ধরা যাক আপনি সেটা পারবেন না। আপনার ভেতরে যদি সৃজনশিলতা থাকে কাল্পনিক শক্তি যদি প্রখর হয় তাহলে হয়তো গ্রাফিক্সে ভাল করতে পারেন। আর সেটা কি ঠিক মতো পারছেন কিনা সেটা আপনিই বলতে পারবেন- অন্য কেউ নয়।

অনলাইনে সুর্নিদিষ্ট কাজ থাকে সব ধরনের কাজ অনলাইনে পাওয়া যায় না। আর সব কাজেই ভাল যোগাযোগে দক্ষ লোকের দরকার হয়। তাই ইংরেজী শিক্ষা আবশ্যক, কারন আপনাকে বিদেশীদের সাথে আলাপ করে কাজ নিতে হবে।

প্রশ্ন না করে প্রথমে অনুসন্ধান করাঃ

এখন ওয়েব অনেক বেশি সম্পদশালী। একটি তথ্যের জন্য অনুসন্ধান চালালে হাজার হাজার লিংক চলে আসে। আপনি কাজ শিখার বা কাজ করার সময় কোন একটি সমস্যায় পড়েছেন। আপনাকে বুঝে নিতে হবে সমস্যাটির ধরন।

এই সমস্যায় কি অন্য কেই পড়েছিল, নাকি আমার একারই এই সমস্যা? আপনি যে জিনিসটি শিখছেন তা নিশ্চই আপনিই প্রথম শিখেন নি। অনেকেই এই কাজ শিখে এবং করে এসেছে। আর তাই অনেকেই এই সমস্যায় পড়েছ, এবং প্রশ্ন করেছে তারা সমাধানও পেয়েছে। আর তাই প্রথমে প্রশ্ন না করে ওয়েবে অনুসন্ধান করুন এবং সমাধানের জন্য প্রশ্নের উত্তর খোজতে থাকেন। অনুসন্ধান করলে দুইটি উপকার হতে পারে।

১. প্রশ্নের উত্তর খোজতে গিয়ে একই ধরনের ভিন্ন কোন টপিক পেতে পারেন যাতে করে একই ধরনের অন্য বিষয়টি শিখতে পারবেন।

২. সঠিক উত্তরটি পাওয়া এবং এর সাথে সাথে অনেকে বিকল্প পদ্ধতি পাওয়া।

ধারাবাহিকভাবে পড়াঃ

ব্লগে ধারাবাহিক পোষ্ট পাওয়া সহজ নয়। অনেক শিক্ষামূলক সাইটে অবশ্য ধারাবাহিক পোষ্ট পাওয়া যায়। যেমন-w3schools.com আমার প্রিয় একটি ওয়েবসাইট এটি, কারন নতুনদের জন্য ধারাবাহিকভাবে সহজে লেখা আছে। আর তাই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। একদিন বেশি সময় থাকলেও অনেক কিছু শিখতে যাবেন না। বরং অল্প অল্প করে অনেক দিন ধরে শিখুন আর যতটুকু শিখবেন ততটুকু কাজে পরিনত করার চেষ্টা করুন।

কাজের চেয়ে পড়া লেখায় বেশি সময় বিনিয়োগ করাঃ

কিছু কাজ শিখে অনেকেই হয়তো হাতে বেশ কিছু কাজ পেয়ে যেতে পারেন আর তাই নিয়ে পরে না থেকে নতুন নতুন কাজ শেখার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিৎ। অবশ্য কাজ করতে করতেও অনেক কিছুই শেখা সম্ভব। নিজেকে একটি গন্ডি থেকে বের করে আনার জন্য অবশ্যই নিরলস জ্ঞান সাধনা করতে হয়।

অনলাইনে প্রশিক্ষণের পদ্ধতিটি রপ্ত করে নিয়মিত নতুন বিষয় শিখলে ভাল কিছু পাওয়া সম্ভব বলে মনে করি।

1 thought on “অনলাইনে প্রশিক্ষণের পদ্ধতিকে সহজিকরণ”

  1. আমার মনের মত একটি পোষ্ট করছেন। শিক্ষার ক্ষেত্রে অবশ্যই সময় ও অধ্যাবসায় দুটোকেই উপযুক্ত ব্যবহার করতে হবে। আবার এটাও ঠিক যে শুধু শিখেই যাবো বাট কাজে লাগাবো না তাহলে সেই শিক্ষার যথাযত মান থাকবে না। যেমনটি আপনি বলেছেন, শিক্ষার পাশাপাশি অবশ্যই তা নেয় কাজ করতে হবে। তাহলে নিজের ভুলভ্রান্তিগুলো নিজেই ধরা সম্ভব। আমি নিজে অনক আগে থেকে এইচটিএমএল ও সিএসএস জানতাম। তবে, এসবে আমার অনেক ভুল যা এখন নতুন করে শিখছি। অন্যকে শিখাতে গিয়ে ভুল গুলো ধরতে পাচ্ছি। যা আমাকে কাজের ক্ষেত্রে নির্ভুলতা দান করছে।

    আর W3schools.Com কে আমি অনেক পছন্দ করি। কেউ যদি ওয়েব প্রোগ্রামিং এ ইচ্ছুক হয় তবে অবশ্যই এখানে থেকে তার ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া About.Com আরো একটি অন্যতম সাইট। যেখানে আমার জানা এমন কোন টপিক বাদ পাই নাই। ওদের সাইটের প্রতিটি প্রোগ্রাম এর জন্য আলাদা সাবডোমেইন করা। এমনভাবে: graphics.about.com, database.about.com ইত্যাদি।

    ধন্যযোগ, ভাল থাকবেন। 🙂

Leave a Comment