কম বাজেটে প্রোজেক্ট শুরু করার সমস্যা সমুহ

নতুন ওয়েব ডিজাইনার ও ডেভলপারদের হাতে কম পরিমানে কাজ থাকে এবং কাজ শিখার উদ্যেশ্যেই হোক বা পোর্টফলিওতে নতুন প্রজেক্টের নাম তোলার জন্যই হোক না কেন- কম খরচে একটি প্রোজেক্ট হাতে নেওয়ার চেষ্টা করে। অপরিপক্কদের মূল হাতিয়ার এটি। কিন্তু দিন দিন কাজটির বাজার মূল্য যাচাই না করে কম দামে নিয়ে বিপাকেও পরেছে অনেকে। শেষ পর্যন্ত কাজটি ফেরতও দিতে হয়েছে।

কম বাজেটে প্রোজেক্ট শুরু করার সমস্যা সমুহ

প্রথমতঃ সঠিক মূল্যে বা  অতিরিক্ত মূল্য কাজের  অর্ডারটি নিলে সেই কাজটি সঠিকভাবে করে দেওয়া যাবে এটা নিশ্চিত। তখন বেশ কিছু বিকল্প পথও তৈরী হয়ে যায়। যেমন-

১. প্রোজেক্টে বেশি সময় দেওয়াঃ

এক সাথে অনেকগুলো প্রোজেক্টের কাজ চলতে থাকলে কম বাজেটের কাজটি সয়ংক্রিয়ভাবেই অবহেলিত হয়। আপনার নিত্য দিনের ব্যক্তিগত কাজের ভীরেও প্রোজেক্টটি মূল্য নাও পেতে পারে। একই সাথে বেশিদামের প্রোজেক্টে বেশি সময় দেওয়া হয়ে যাবে। তাছাড়া কাজটি কম দামে নেওয়ার কারনে ঘন্টার হিসাব করলেও বিষয়টিকে অবজ্ঞার প্রবণতা চলে আসবে।

২. আউটসোর্সিং করানোঃ

হয়তো আপনি মনে করেছিলেন কাজটি আপনি নিজেই বা নিজের টিমের লোকদের দিয়ে করাতে পারবেন। কিন্তু দেখা গেল হাতে এত কাজ যে বেশ কিছু কাজ হাত থেকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় আপনি যদি কোন কম দামী কাজ নিয়ে থাকেন তাহলে সেটা আউটসোর্সিং করাতে আপনার বারটা বাজবে। কাজটি হয় কোন অপরিপক্ক লোকের হাতে দিতে হবে না হয় আউটসোর্সিং করানোর জন্য লোক খুজে পাওয়া যাবে না। যদি প্রোজেক্টটি ভাল দামে নেওয়া হয় তাহলে অবশ্যই আপনি কাজটি প্রোফেশনাল কাউকে দিয়ে করিয়েও বেশ কিছু টাকা পকেটে রাখতে পারবেন।

৩. টেষ্টিং ও মডিফিকেশনঃ

কোন একটি ওয়েব ডিজাইন বা সফটওয়্যারের কাজ করলেন। এখন সেটির প্রকাশ করার আগে ক্লাইন্ট আপনাকে বেশ কিছু জিনিস পরিবর্তন পরিবর্ধণ করতে বলতে পারে। যেহেতু টানাটানির বাজেটে করা কাজ। আপনি নিশ্চই এই সার্ভিস দিতে পারবেন না। আর যদি কাজটি করে বেশ ভাল মুনাফা হয়ে থাকে তখন সেই মুনাফা থেকে কিছু খরচ হলেও সমস্যা মনে হবে না বলে সফটওয়্যারের মডিফিকেশন করে দিতে পারবেন।

৪. ভাল সাপোর্ট দেওয়াঃ

বর্তমান সময়ে সাপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার তৈরী সফটওয়্যার ব্যবহার করতে ব্যবহারকারীদের বেশ কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাদেরকে ডকুমেন্টারী বা মৌখিকভাবে ট্রেনিং বা বুঝানোর দরকার হতে পারে। আর সেটি একেবারেই বিনামূল্য দেওয়ার নিয়ম। এমনও হতে পারে, আপনার তৈরীকৃত সফটওয়্যারের ব্যবহার প্রনালীও দেখিয়ে দিতে হতে পারে এবং তাদের অফিস ভ্রমণও করতে হতে পারে।

তার মানে কম বাজেটে কাজটি শুরু করার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলোর মধ্যে পরে যেতে পারেন। তবে কাজটি যদি কম বাজেটে নিয়েই ফেলেন চেষ্টা করবেন ভালভাবে কাজটি করে দিতে। এমনও হতে পারে একটি প্রোজেক্ট আপনাকে আরো দশটি প্রোজেক্টের কাজ এনে দিতে পারে।

মূলতঃ প্রোজেক্টটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা না নিয়ে কাজ শুরু করলে টাকা পয়সার হিসাবটা অমিল হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে কাজটি শুরু করার সময় যদি বুঝতে পারেন কম টাকায় কাজটি নেওয়া হয়ে গেছে। সাথে সাথে ক্লাইন্টের সাথে আলাপ করে  কাজটি বাদ দিয়ে দেওয়ার বা নতুন করে দাম নির্ধারণ করে নিতে পারেন। কখনোই সময় নষ্ট করা যাবে না।

3 thoughts on “কম বাজেটে প্রোজেক্ট শুরু করার সমস্যা সমুহ”

  1. গুরুপ্তপূর্ণ কয়েকটি পয়েণ্ট তুলে ধরেছেন। এখানে আমি আমার ব্যক্তিগত কিছু কথা বলবো:

    ১. মূল্য নির্ধারন যেখানে মূল বিষয় সেখানে আমি কতটুকু অভিজ্ঞ ডিজাইনার বা আমি কত ভাল কাজ জানি তা আমি নিজে ছাড়া কেউ জানে না। এক্ষেত্রে আমি যদি ভাল মানে ডিজাইনার হই তবে, দাম হাকাবো আমার চাহিদা অনুযায়ী। কারন এক্ষেত্রে আমার শ্রম এবং মেধার মূল্যায়ন আমাকেই করতে হবে।

    ২. ভাল মানের ডিজাইনার হলে অবশ্যই কম দামে কাজের মানুসিকতা ছাড়তে হবে। এক্ষেত্রে কম দামে করলে হয়তো আমি বছরে ১০টি সাইটের কাজ পেতাম তার থেকে হয়তো আমার ২,০০,০০০ টাকা আয় হতো। কিন্তু আমিতো ভাল মানের ডিজাইনার কেন আমি কম মূল্যে কাজ করবো। দিনে ৫/৬ বার খাবার খাওয়ার থেকে ভাল মত তিন বার খেলেই তো যথেষ্ট। 😉

    ৩. নতুনদের নিয়ে যে কথাটি বললেন, আসলে নতুনরা তো আর একদিনে ভাল মানের হয় না। তাদের শ্রম, মেধা আর সৃজনশীলতা তিনটিকে কাজে লাগিয়ে সময়ের সাথে সাথে মান বাড়াতে হবে। তাহলেই না কাজে দিবে!!

    ৪. মূল্য নিয়ে আরো একটু বলতে হয়, আসলে মূল্য একটি আপেক্ষিক ব্যাপার। এখানে যে যার যেমনভাবে খুশি চাইতে পারে। তবে, নিজের মান যাচাই না করে কম বা বেশি মূল্য নিধারন করাটা অযুক্তিক বলে আমি মনে করি। এক্ষেত্রে target=”_blank”>হাসান ভাইয়ে ব্লগ পোষ্টি শিক্ষণীয়।

    ধন্যযোগ, ভাল থাকবেন! 🙂

  2. আমি একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার। যেহেতু নতুন তাই কেউই কাজ দিতে চায় না।
    আবার গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজও যদি পাই প্রফেশনাল না হওয়ায় তাও করতে পারি না।এমতাবস্থায় যদি সহজ কোনো ফ্রিল্যান্সিং সাইটের এ্যাড্রেস যদি দেন তো খুশি হব। 😐

Leave a Comment