ভিন্ন ধারার অনলাইন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজীঃ ৪ পদ্ধতি

ইদানিং সামাজিক নেটওয়ার্ক এবং বাংলাদেশের অনলাইন মার্কেটিং এর অবস্থাটি দেখছিলাম। একটা সময় ছিল যখন ইন্টারনেটের বিষয়টি শুধু মাত্র তথ্য প্রদানের মাধ্যম হিসেবেই দেখা হতো। কিন্তু এখন এটি যোগাযোগ এর রিয়েলটাইম মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। ই-মেইল আদান প্রদান ও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তথ্য প্রদানের জন্যই নয় বরং এটি সবসময়ের কানেকশনের বেপারটি মূখ্য হয়ে উঠছে। বিষয়টি শুধু ব্যাবসায়ীক সীমাবদ্ধতা থেকে সরে এসে সামাজিক দায়বদ্ধতায় পরিনত হচ্ছে।

ভিন্ন ধারার অনলাইন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজী


আরেকটা বেপার হলোঃ এখন দুইটি অংশ একই কাজে এগিয়ে যাচ্ছে.. কাজ এক কিন্তু উদ্দেশ্য ভিন্ন। একজন তার পণ্যের প্রচারের জন্য অনলাইনে এসেছে আরেকজন এসেছে তার প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে বা যোগাযোগ করতে। এই অবস্থায় অনলাইন মার্কেটিং এর বিষয়টি অনেকের কাছেই একটি ঝামেলাকর বিষয়ে পরিনত হচ্ছে। এক দল দ্রুত সফলতার জন্য বেছে নিচ্ছে স্প্যামিং। অনেক সময়ই এই স্প্যামিং এবং মার্কেটিং দুইটি বিষয়কে গুলিয়ে ফেলা হয়। আর এজন্য মার্কেটিং এর পদ্ধতিতে এমন একটি ভাবধারা বজায় থাকতে হবে যে, আপনি মার্কেটিং -ই করছেন না বরং আপনার মার্কেটিং অন্যে করছে। বিষয়টা একটু কঠিন হলেও দেখে নিতে পারেন।

১. প্রফেশনাল ভাব বাদ দেওয়া ও ব্যক্তিগত আচরণ

ধরা যাক আপনি একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। আপনি কারো সাথে কথা প্রসংগেই যদি তাকে আপনার মার্কেটিং এর দাওয়াত দেওয়া শুরু করেন তাহলে আরেক দিন আপনার সাথে সে কথা বলতেই আসবে না। অধিকাংশ মানুষই মার্কেটিং এর লোকদের ঝামেলা দেখে এসেছে এবং তাদের কথা জোর করে শুনে কান ঝালা পালা হয়ে পালিয়ে গেছে। ইন্টারনেটে একটা সময় কেউ যোগ দান করলে প্রথমেই নিজের একটা মেইল আইডি খোলতেন। এখন ফেসবুক ও ইউটিউবের আইডি খোলতে দেখা যায় বেশি। যারা মেইল খুলেছে তারা অনেকেই অপ্রয়োজনীয় মেইল মুছে ফেলেছে আর তাই তারা এখন ই-মেইল সাবক্রাইব করতে ভয় পায়। ফেসবুকে  ফালতু রিকোয়েষ্টে আনেকেই অস্থির হয়েছে তাই এখন তারা যে কোন গ্রুপে যোগ দেয় না। অনেকেই তাদের বন্ধুর সংখ্যা কমিয়ে নিতেছে। আর তাই অনলাইন নেটওয়ার্কে আপনার নিজের পরিচয়ের চেয়ে প্রোফেশনাল পরিচয়টা বড় হয়ে ওঠবে না-এমনটা আরেক ধরনের মার্কেটিং।

২. পণ্য নয় নিজেকে প্রকাশ

ভিন্ন ধারার অনলাইন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজী


এক দল কিন্তু খুব ভাল ভাবেই বসবাস করছে অনেক অনেক কানেকশনের সাথে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও । সামাজিক নেটওয়ার্কে শুধু নিজেকে ব্যক্তিগত পরিচয়ে পরিচয় দিবেন। অনেকগুলো পরিচয়ের সাথে আপনার মার্কেটিং সার্ভিসের পরিচয়টিও থাকবে। আপনার সার্ভিসটি তার দরকার হরে যাতে আপনার কাছেই সে আসে, সেই ধরনের সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। আমি আমাদের অফিসের আইটি বিভাগে কর্মরত আছি। আমি মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজনকে ভাল জানি। তার মধ্য একজনকে ব্যক্তি হিসেবে বেশি ভাল জানি। আর আমার কাছে অনেক সময়ই বেশ কিছু ক্লায়েন্ট আসলে আমার জানা ভাল ব্যক্তিটির কাছে পাঠিয়ে দেই । কিন্তু এই ক্লা্য়েন্ট যে আমার মাধ্যমে গিয়েছে সে তা জানতেও পারে না।
প্রকৃত বেপার হলো এটা তার প্রাপ্য। আর তাই নিজের গুণাবলীও মার্কেটিং এ একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
অনলাইন রেপুটেশনের বেপারে একবার আমি একটি পোষ্টে বলেছিলাম। আপনার দূর্বলতম কোন বিষয় অনলাইনে পাবলিশ হলে আনলাইন মার্কেটিং এ সমস্যা হবেই। আর তাই ইন্টারনেটে অবশ্যই নিজেকে মার্জিত করে প্রকাশ করতে হবে। অহেতুক ঝামেলায় জরানো যাবে না এবং অনলাইনে কথা বলতে হবে অতি সাবধানে।

৩. নিজের সৃজনশীলতার প্রকাশ

নিজের সৃজনশীলকাজগুলোকে প্রকাশের মাধ্যমে আপনার একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হবে। আনলাইনে হালকা অনেক কথা ও কাজ প্রকাশ না করে সৃজনশীল কয়েকটি কাজের ধারা বর্ণনা কররে দেখবেন অনেকেই সেটার প্রশংসা করবে। মূলতঃ আপনার সাথে কাজ করতে চাইবে বা আপনার কাজগুলোকে অনুসরণ করবে। আর এটা যে বড় কোন সৃজনশীল কাজ হতে হবে তা না। হয়তো আপনি ভ্রমনে গিয়েছেন, সেখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দেখেছেন। সেখারকার ছবি , অবস্থান ও তার বর্ণনা আপনার পরিচয়ের মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। এডভেঞ্চার এবং কৌতুকপূর্ণ বিষয়গুলো অনলাইনে বেশি আলোচিত হয়। কিন্তু ব্যাবসায়ীক বিষয় থেকে বরাবরই লোকজন দূরে থাকতে ভালবাসে। আর তাই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।

৪. অন্যের বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া

নিজেকে প্রকাশ নিজের কাজই সব কিছু না। অন্যের সাথে যোগাযোগটিও হতে হবে একটু উন্নত পদ্ধতির। সহযোগিতা করতে হবে সহযোগিতার মানুষিকতা নিয়ে চলতে হবে। সামাজিক নেটওয়ার্কের জীবনটিকে ব্যক্তিগত একটি পৃথিবীতে পরিনত করতে হবে। আর নতুন নতুন পরিচয়কে কখনো আবজ্ঞা করা যাবে না। আর সব চেয়ে বেশি দরকার যেটা তা হলো অনলাইনে কাছে থাকা এবং প্রয়োজনে খুবই দ্রুত সারা দেওয়া। অনলাইন মার্কেটিং এর উপরে এর আগে আমি বেশ কিছু পোষ্টও দিয়েছি। দেখে নিতে পারেন।

আশা করা যায়  অনলাইন মার্কেটে নিজের কষ্ট সাধ্য কিন্তু স্থায়ী একটি অবস্থান তৈরী করতে পারবেন।

২৬ জুন ২০১১

3 thoughts on “ভিন্ন ধারার অনলাইন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজীঃ ৪ পদ্ধতি”

  1. ধন্যবাদ মাহাবুব ভাই,
    অনলাইন মার্কেটিং বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারলাম। সৃজনশীলতা মানুষকে একজন থেকে অন্যজনকে পৃথক করে। তাই শুধু অনলাইন মার্কেটিংই নয় সকল ক্ষেত্রেই এটা মানুষের ওভারভিউ প্রকাশ করে।

Leave a Comment