এনালগ এবং ডিজিটাল সিগন্যাল সম্পর্কে ধারণা এবং ডিজিটাল সিগন্যালের সুবিধা

আমাদের দৈনন্দিন কাজে যে সকল ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি বা মেশিন সমূহ ব্যবহার করে থাকি তার সবই এনালগ বা ডিজিটাল কিংবা উভই সিগন্যাল প্রসেসিং এর মাধ্যমে কাজ করে থাকে। এই আপনার কম্পিউটারের স্পিকার এবং মাইক্রোফোনের কথাই ধরুন না, মাইক্রোফোনটি আমাদের ভয়েজ সিগন্যালকে এনালগ এসি সিগন্যালে রূপান্তর করে এর পর এই সিগন্যালকে CPU প্রসেসিং এর পূর্বে ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তরিত করে নেয়, এবং প্রয়োজনীয় প্রসেসিং প্রক্রিয়া শেষে ফলাফল স্পিকারের মাধ্যমে প্রকাশের পূর্বে এনালগ সিগন্যালে রূপান্তর করে। তাই আমাদের ব্যবহার্য এ সকল ডিভাইস এবং মেশিনের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম সম্পর্কে জানার জন্য এনালগ এবং ডিজিটাল সিগন্যাল সম্পর্কে জানা জরুরী।

[tutosubscribe]

এনালগ সিগন্যাল

সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল বৈদ্যুতিক সিগন্যালকে এনালগ সিগন্যাল বলে। এনালগ সিগন্যালের অ্যামপ্লিচিউড সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন মানের মধ্যে যে কোনো মান গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু হঠাৎ করেই যে কোন মানে পরিবর্তিত হতে পারে না। এনালগ সিগন্যালের যে কোন মানে পরিবর্তিত হতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়। অডিও সিগন্যাল একটি এনালগ সিগন্যালের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

পাশের এনিমেশনটি একটা এসি সিগন্যাল বা এনালগ সিগন্যালের। এর মাধ্যমে সময় পরিবর্তনের সাথে সিগন্যালের দিক এবং ভোল্টেজের অ্যামপ্লিচিউড মান পরিবর্তনের বিষয়টি প্রদর্শন করা হয়েছে। সিগন্যালটি প্রথমে 0 ভোল্ট হতে বৃদ্ধি পেয়ে পর্যায়ক্রমে +১ ভোল্ট, +২ ভোল্ট, +৩ ভোল্ট এভাবে সর্বোচ্চ +৫ ভোল্টে পৌছে আবার কমতে শরু করে +৪ ভোল্ট, +৩ ভোল্ট, +২ ভোল্ট এভাবে 0 ভোল্টে পৌছে। এরপর উল্টা দিকে বৃদ্ধি পেতে থাকে এক পর্যায়ে -৫ ভোল্টে পৌছে আবার আবার উল্টা দিকে কমতে শরু করে 0 ভোল্টে পৌছায়।

ডিজিটাল সিগন্যাল

ডিজিটাল সিগন্যাল এমন একটি সিগন্যাল যা সাধারণত দুটি বা নির্দিষ্ট কয়েকটি ভোল্টেজ লেভেল নিয়ে গঠিত। এ ক্ষেত্রে সিগন্যালের ভোল্টেজ লেভেল একটি নির্দিষ্ট মান হতে অপর মানে পরিবর্তিত হতে কোন সময়ের প্রয়োজন হয় না। সচরাচর ডিজিটাল সিগন্যালের ভোল্টেজ লেভেল দুটিকে লজিক 0 এবং লজিক 1 দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

পাশের এনিমেশনটি একটি ডিজিটাল সিগন্যালের। যেখানে দুটি ভোল্টেজ লেভেল লজিক 0 এবং লজিক 1 কে যথাক্রমে 0 ভোল্ট এবং 5 ভোল্ট দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। সিগন্যালটিকে ভালভাবে খেয়াল করলে দেখা যায় সিগন্যালটি লজিক 1 থেকে শরু করে ১ সেকেন্ড পর লজিক 0 তে পরিবর্তিত হয়। ঠিক ১ তম সেকেন্ডে সিগন্যালটি যেমন লজিক 1 এ থাকে আবার লজিক 0 তেও থাকে । তাই বল হয় ডিজিটাল সিগন্যালের একটি নির্দিষ্ট মান হতে অপর মানে পরিবর্তিত হতে কোন সময়ের প্রয়োজন হয় না।

[tutoadsense]

ডিজিটাল সিগন্যাল ব্যবহারের সুবিধা

  • ডিজিটাল সিগন্যাল মাত্র দুটি বা নির্দিষ্ট সংখ্যক মানে পরিবর্তিত হয় বলে ভুল হবার সম্ভাবনা কম থাকে । ফলাফল হিসেবে ডিজিটাল সিস্টেম নয়েজের প্রভাব মুক্ত থাকে।
  • ডিজিটাল সিগন্যালের একটি মান হতে অপর মানে পরিবর্তিত হতে কোন সময়ের প্রয়োজন হয় না তাই ডিজিটাল সিস্টেম এনালগ সিস্টেমের চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন হয়।
  • এনালগ সিগন্যালের তুলনায় ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেসিং এবং মেমরিতে সংরক্ষণ সহজ এবং ট্রুটিমুক্ত । আমাদের পেন ড্রাইভ মেমরি কার্ড ডিজিটাল পদ্ধতিতে ডাটা প্রসেসিং এবং মেমরিতে সংরক্ষণ করে থাকে বলে ডাটার কোন পরিবর্তন হয় না। অন্যদিকে আগের দিনের অডিও ক্যাসেটে এনালগ পদ্ধতিতে ভয়েজ সিগন্যাল সংরক্ষণ করা হতো।
  • ডিজিটাল সিস্টেমের ডিজাইন সহজ এবং আকারে ছোট হয়। আর এজন্যই বর্তমানে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশের আকার দিনে দিনে ছোট করা সম্ভব হচ্ছে।

1 thought on “এনালগ এবং ডিজিটাল সিগন্যাল সম্পর্কে ধারণা এবং ডিজিটাল সিগন্যালের সুবিধা”

  1. আশরুল আলম

    আপনাকে ধ্ন্যবাদ ।এ ধরনের বিষয় নিয়ে বেশী করে লিখবেন।এই দোয়া করি।

Leave a Comment