ওয়েবসাইটের ডিজাইন এবং ওয়েবসাইটের ধরন

একজন ব্যক্তির সাথে প্রথম পরিচয়ে বেশ কিছু জিনিস প্রাথমিকভাবে জানা যায়। প্রথম দেখায় লোকটির চেহারা ও পোষাক দেখেই অনুমান করা হয় লোকটি কি রকম মানের হতে পারে। এজন্য অনেকে অবশ্য নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনার চেষ্টা করে,  অনেকেই নিজের পোষাকের রঙের বেপারে বেশ সচেতনও থাকে।

ধরুন আপনি একটি প্রতিষ্ঠানে ইন্টারভিউ বোর্ডে বসেছেন। প্রথমে আপনাকে দেখেও কিছু কুছু বিষয় অনুমান করতে পারে। চাকরীটি যদি কাষ্টমার কেয়ার হয়ে থাকে তাহরে আপনার শারিরীক গঠন, পোষাক, বাচন ভঙ্গি, আচরণসহ বেশ কিছু বিষয়ের হিসাব কষে আপনার মান যাচাই করবে। চাকরীটি কোন টেকনিক্যাল বিষয়ে যেমন প্রাগ্রামার ইত্যাদি হরে আপনার প্রোগ্রামিং দক্ষতার বেপারে বেশ কিছু প্রশ্ন ও  কাজের মাধ্যমে যাচাই করা হবে।

ওয়েবসাইটের ডিজাইনের ক্ষেত্রেও বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। কোন সামাজিক ব্লগ সাইটের ডিজাইন, পোর্ট ফলিওর ডিজাইন বা কোন কপোর্রেট ওয়েবসাইটের ডিজাইনে বেশ কিছু বিষয়ে পছন্দের ভিন্নতা থাকে। কেন থাকে? কোন কোন সাইটে ফ্লাস ব্যবহার করা হয় এবং বেশ সুন্দর লাগে। কোন কোন সাইটে এগুলোর কিছুই দেখা যায না, সাদা মাটা ডিজাইন। এখন বিষয়টিকে একটু বাস্তবতার দিক দিয়ে দেখি।

ওয়েবসাইট otobi.com

ওয়েবসাইট otobi.com
অটবি একটি সু-প্রতিষ্ঠিত ফার্নিচার প্রতিষ্ঠান। তারা সৃজনশীল বেশ কিছু নতুন ডিজাইনের জন্ম দেয় যা এদেশে অনেক কম প্রতিষ্ঠানেই দেখা যায়। আর তাই তাদের সাইটটিতে সৃজনশীলতার ছোয়া থাকা দরকার ঠিক তাই আছে। সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটটি একটি ফ্লাস দিয়ে তৈরী করা। এবং এর মধ্যেই আছে তাদের গ্যালারী।

গাড়ীর ওয়েবসাইট nissan.co.uk

গাড়ীর ওয়েবসাইট nissan.co.uk

গাড়ী ক্রেতারাও একটু সৌখিন হয়। ক্রেতাদের অনেকেরই থাকে বেশি স্পিডের ইন্টারনেট লাইনের সংযোগ। আর একটু ভারী ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা তাদের কাছে কঠিন কিছু না। আর তাই তো একটু শক্তিশালি গ্রাফিক্স আর এনিমেশন দেখা যায় গাড়ীর ওয়েবসাইটগুলোতে। অনেকে অবশ্য জে-কোয়েরীও ব্যবহার করেন। আপনার ইন্টারনেট গতি যদি ভাল হয় তাহলে দেখে নিন বেশ কিছু ওয়েবসাইট যেখানে অনেক উন্নত এনিমেশন ব্যবহৃত হয়েছে।

নিউ-ইয়র্ক টাইমস

নিউ-ইয়র্ক টাইমস

নিউইয়র্ক টাইমসের সাইটটি অনেক বেশি জনপ্রিয় একটি খবরের ওয়েবসাইট। এটার ডিজাইনের জনপ্রিয়তাও কম না। বিশ্বের ৮৫তম জনপ্রিয় সাইটটি অনেক হালকা ও তথ্যসমুহকে সুবিন্নস্ত করতে গ্রিডের বিচিত্র ব্যবহার করেছে। এখানে গ্রাফিকস ও ভিডিও পরিশিলিত ব্যবহার লক্ষনীয়।

বিশ্ব সেরা অত্যন্ত জনপ্রিয় সাইট ও সার্ভিসগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবেন যে কত বৈচিত্রতা রয়েছে কাজের ধরন অনুসারে। সাইটের দিকে তাকালেই বুঝা যেতে হবে সাইটের ভাব ও ভাষা। বিশ্বের অধিকাংশ ব্লগেই গুটি কয়েকটি ডিজাইন ব্যবহার করে আসছে। যত বেশি জনপ্রিয় সাইট তত বেশি হালকা ও কম রঙের বৈশিষ্ট্যটাও লক্ষনীয়।

এখন অন্য প্রসঙ্গে আসি,
ধরুন একজন তার সাইট বানানোর জন্য আসলো। এবং তার প্রয়োজন ফ্লাসের নান্দনিক একটি ডিজাইন। কিন্তু আপনি ও আপনার টিমের লোকজন সাধারনত ফ্লাসের কাজগুলো করেন না। এখন আপনার কি করা উচিৎ হবে? তাকে কি বুঝাবেন যে,
তার সাইটটি ফ্লাসে না করে জে-কোয়েরী দিয়ে সুন্দর এনিমেশন করে দিতে পারেন।
অথবা তার সাইটটি খুবই হালকা রাখা উচিৎ তাই ওয়ার্ডপ্রেস কাষ্টমাইজ করে সাইট বানিয়ে দিবেন।
নাকি তাকে একজন ফ্লাসের ডেভলপারের সাথে যোগাযোগ করতে বলবেন?

মূলতঃ নিজের অযোগ্যতার দরুন কোন ক্লাইন্টের রিকোয়্যারমেন্টকে এড়িয়ে গেলে চলবে না। সাইটর ধরণ, লক্ষ্য এবং চাহিদার কথা মাথায় রাখতে হবে। সাইটে যাতে সর্ম্পর্ণ বিষয়টি ফুটে ওঠে। ডিজাইনের প্রাথমিক পরিকল্পনার আগে সাইটের ধরন, কোন ধরনের পাঠক ভিজিট করবে ইত্যাদি সহ বেশ কিছু জিনিস জেনে তার পর শুরু করা উচিৎ।

আরও পড়ুনঃ

4 thoughts on “ওয়েবসাইটের ডিজাইন এবং ওয়েবসাইটের ধরন”

  1. আমার মতে ব্লগ যদি গ্রাফিক্স কিংবা ওয়েব ডিজাইন এর টিউটোরিয়াল এর হয় তাহলে সাইটাকে বেশ ভালো করে সাজানো দরকার যেমন জে-কোয়েরী দিয়ে সাজানো উচিৎ। এই কথা গ্রাফিক্স কিংবা ওয়েব ডিজাইনার এর পোর্টফলিও সাইট এর ক্ষেত্রেও খাটে।
    আবার মার্কেটিং এর বিষয় এর সাইট হয় তাহলে হালকা পাতলা ডিজাইন ব্যাবহার করা ভালো। নিউ-ইয়র্ক টাইমস এর হেডার এ ব্যবহৃত ফন্ট সাইটার মতই জনপ্রিয়।

Leave a Comment