ওয়েবসাইটের কাজ হাতে নেওয়ার আগে যে প্রশ্নগুলো করবেন

আপনি হয়তো ওয়েব ডিজাইনের অনেক কিছুই ইতিমধ্যে শিখে ফেলেছেন। আপনি হয়তো কোডিং, ডিজাইন আর রং ও শব্দ ছবি সম্পর্কে ঝাঝালো বক্তব্য দিতে পারবেন। তার মানে এই নয় যে আপনি বর্তমান পৃথিবীর অনেক কিছু শিখে ফেলেছেন, আপনি আপনার ক্লাইন্টের চাহিদাটা বুঝে ফেলেছেন। আপনাকে আপনার সৃজনশীলতা আর ক্লাইন্টের সৃজনশীলতা ও চাহিদাকে একসাথে মিশ্রণ করে ডিজাইনের কাজে হাত দিতে হবে। আপনি কি একজন ফ্রিল্যান্সার ওয়েব ডিজাইনার? সরাসরি কাষ্টমারের সাথে কাজ করেন? তাহলে পড়ে নিন একটু ভাল ভাবে, কি কি জিনিস জেনে নিবেন ক্লাইন্ট থেকে? আর যদি অন্য কেউ (টেকি লোক) রিকোয়ারমেন্ট এনালাইসিস করে তাহলে হয়তো সবগুলো বিষয় আপনাকে দেখতে হবে না। সরাসরি কাজে হাত দিন।

questions

১.আপনার ওয়েবসাইট প্রয়োজন কেন?

এক এক জন এক এক কারনে সাইট বানায়। কেউ তার প্রতিষ্ঠানের তথ্যগুলোকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে রাখতে চায় যাতে বিশ্বরে বিভিন্নপ্রান্ত থেকে লোকজন তা দেখতে পারে। কেউ আবার নিয়মিত তার প্রতিষ্ঠানের আপডেট জানাতে চাইতে পারে। আবার হয়তো বা অনেকে তার সাইটটাকেই ব্যবসা ভাবতে পারে, যেমন ব্লগ বা ডাউনলোডের সাইট ইত্যাদি। কেউ বা ই-কমার্সের কাজও করতে চাইতে পারে।

২. আপনার ব্যবসা/প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে বলুন

অবশ্যই জেনে নিবেন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে। তার প্রতিষ্ঠানটি কি কি সুবিধা প্রদান করে বা মৌলিক কাজটি কি? তার প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যয়ের সাথে তার এই ওয়েবসাইটের গুরুত্ব/সম্পর্ক কতটুকু তাও জেনে নিবেন। প্রতিষ্ঠানটির দর্শন ও ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটি কি অস্থায় উন্নিত করতে পারে – এ বেপারে একটি ধারনা থাকলে ডিজাইনে সেই ধরনের থিম তৈরী করা যেতে পারে।

৩. অন্যদের তুলনায় তা প্রতিষ্ঠান কি কি বাড়তি সুবিধা দেয়?

তার ব্যবসায়ীক প্রতিযোগির তুলনায় সে বাড়তি কি কি সুবিধা প্রদান করে? কোন বিষয়টি হাইলাইট করারা মতো? কোন কোন বিষয়ে অন্যদের থেকে তার প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আছে?

৪. তার প্রতিষ্ঠান কোন ধরনের সমস্যা সমাধান করে?

তার প্রতিষ্ঠানের মৌলিক পণ্য বা সেবা কি? সে কোন ধরনের কাষ্টমারের চাহিদা মিটায়? কোন সমস্যার সমাধানের জন্য তার প্রতিষ্ঠনটি কাজ করে যাচ্ছে? কোন কোন কর্ম পদ্ধতি অন্যদের থেকে তাদেরকে আলাদা করেছে? – এই বিষয়গুলো জানলে ডিজাইনের কাজে লাগতে পারে।

৫. তার ওয়েবে কোন ধরনের ভিজিটর আসবে?

কোন কোন ওয়েবসাইটে দেশি ভিজিটরকে টারগেট করা হয়। কোন কোনটাতে বিদেশি কোন এলাকার লোকজনকে টারগেট করে কাজ করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট বয়সের লোকদের টারগেট করে কাজ করা হয়। আর তার উপরে ডিজাইনের অনেকগুলো বিষয়ই নির্ভর করতে পারে। যেমন- বাচ্চাদের জন্য তৈরী ওয়েবসাইটে বাচ্চাদের পছন্দের থিম ও ডিজাইন দিতে হবে। কোন প্রফেশনাল বা কর্পোরেট জন্য সাইট ডিজাইন করতে গেলে অবশ্যই ডিজাইনের চেয়ে তথ্যের গুরুত্ব বেশি পাবে। ওয়েব এপ্লিকেশন বানানোর ক্ষেত্রে ডিজাইনটির চেয়ে প্রোগ্রামিং অংশটি বেশি নিখুত হতে হয়।

৬. আপনার বাজেট কত?

আর আপনার ব্যক্তিত্ব, সময়ের মূল্য ও ডিজাইন তিনটি বিষয় এক হলেই কাজটি শুরু করা যায়। তাই তার ডিজাইনের বেসিক রিকোয়্যারমেন্ট ও তার বাজেট কত – তা তার কাছ থেকেই শুনে নিবেন। অনেক সময় ক্লাইন্ট না ও বুঝতে পারে যে কত টাকা বাজেট হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাকে সরাসরি টাকার হিসাবটা না দিয়ে ওয়েব ডিজাইনের খরচের বেপারটা বুঝিয়ে দিতে হবে। এবং এর আগের কোন কোন ডিজাইনের আনুমানিক খরচের বেপারটি বুঝিয়ে দিবেন। খরচের হিসাবটা না মিললে তাদের সাথে সাধারন সম্পর্ক রাখুন। এবং এগিয়ে যেতে পারেন।

৭. কত দিনের মধ্যে আপনার ওয়েবসাইটটি প্রয়োজন?

ফ্রিল্যান্সার ডিজাইনারদের অনেক সময় কাজের অনেক চাপ থাকে, আবার কিছু সময় কাজ হাতে নাও পাওয়া যেতে পারে। আর তাই টাকার সাথেও সময়ের বেপারটি যুক্ত। সুবিধাজনক সময় মিলে গেলে কম টাকাতেও কাজ করা সম্ভব হতে পারে।

৮. এ ওয়েবসাইটটি নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?

ওয়েবসাইটটিতে ভবিষ্যতে কি কি কাজ হবে তা অনেকে হলফ করে বলতে পারবে না। তবে অনেকে অবশ্যই এ বেপারে কথা বলতে পারে। তাদের কাছ থেকে জেনে নিন ভবিষ্যতেও কি সাইটটি নিয়ে আপনাকে কাজ করেত হবে কিনা। নতুন কোন সার্ভিস যুক্ত হবে কিনা এই সাইটে? আর সেই অনুযায়ী আগে থেকে কাজ করলে ভবিষ্যতে রিডিজাইনেও সুবিধা হতে পারে।

৯. ওয়েবসাইটটি আপডেট করবেন কারা?

ওয়েবসাইটের কনটেন্ট নিয়মিত আপডেট করার দরকার হলে সেটা কে করবে তাও আপনার জানা দরকার হবে। এটা আপনি করলে সার্ভিস চার্জের বেপারটা আসবে। আর সেটা অন্য কেউ করলে আপনার ডিজাইনের উপরেও হস্তক্ষেপ করতে পারে। এই সব বেপারে পরিষ্কারভাবে জেনে নিলে ভাল হয়।

১০. ওয়েবসাইটে কি কি জিনিস না থাকলেই ভাল বলে মনে করেন?

প্রতিষ্ঠানের অনেক বিষয় আছে যা সাধারনত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয় না। একটি ফার্নিচারের প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে সব ফার্নিচারের ছবি থাকতে হবে তা নয়, একজন গায়কের ওয়েবে সব গান দেওয়া যাবে না। আর কি কি বিষয় প্রকাশ করা হবে না তাও জেনে নিন। এতে করে প্রতিষ্ঠান ও ওয়েবসাইটের ভবমুর্তির জন্য ভাল হয়।

আশা করা যায়, এই সব বিষয়গুলো জেনে কাজ শুরু করলে ডিজাইনের কাজে বেশ কিছু সুবিধা এনে দিবে। সবাই ভাল থাকুন। আপমার পরের লেখার দাওয়াত রইলো।

…………..

অনেকে ফ্রি ওয়েব হোষ্টিং সাইটের নাম জানতে চাইছিলেন। ফ্রি ওয়েব হোষ্টিং পেতে যোগাযোগ করুন।

পোষ্ট সূত্র

12 thoughts on “ওয়েবসাইটের কাজ হাতে নেওয়ার আগে যে প্রশ্নগুলো করবেন”

    1. @শিবলী, বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে এর আগে প্রকাশ করেছিলাম। এখানে যে প্রশ্নগুলো করেছি তা একেবারে বেসিক বেপার। প্রতিষ্ঠানটির সার্ভিসের পার্থক্যের উপরে ভিত্তিকরে আরো অনেকগুলো প্রশ্ন করা যেতে পারে।

      ধন্যবাদ আমার লেখাগুলো অনুসরন করার জন্য।

      1. @ডিজে আরিফ, নিচ্ছি ব্রাদার, নিচ্ছি! মনোযোগ দিয়ে লিখি নাই। ঐটা একটা খসড়া ভাবে লিখেছি।
        ভুল হয়ে গেছে একটা “কামিং ছুন” নোটিস লাগিয়ে দিতে হবে। ফুল ডেভেলপ শেষে ইয়ে করতে হবে। তবে আমার ইংরেজিতে সমস্যা হয়। বাক্য গত আর বানান গত ভুল হয়। সব সময়।

  1. মাহবুব ভাই, যেকারও জন্য [যার ব্লগ বা ওয়েবসাইট আছে বা বানাবে] এটি দরকারী পোস্ট… বিশেষ করে এখন শিবলীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট…

    টিউটোরিয়াল বিডিতে গেস্ট পোস্ট কমে গিয়েছে কেন?
    আগে যারা গেস্ট পোস্ট করতো তাদের এখন দেখা পাওয়া যাচ্ছে না কেন?

    1. @ডিজে আরিফ,

      আমি আমার ইসলামিক ব্লগটির জন্য ডিজাইনার চাই… আমি চাচ্ছি যে ডিজাইন যাতে ইউনিকিউ হয়, এবং আমার মনের মত হয়, সহজেই লোডিং হবে [মানে ভারী সাইজের ছবি কম ইউজ হবে] দেখতেও যাতে দৃষ্টিনন্দন হয়…

      আপনার জানা এমন কেউ কি আছে যে আমাকে মনের মত ডিজাইন করে দিতে পারবে?

      *আমি নিজে গরীব মানুষ [শুধু আমার কথা বলছি], এখনো নিজের পায়ে দাড়াইনি 😉 তাই পারিশ্রমিক খুব বেশি দিতে পারবো না…

      1. @ডিজে আরিফ, অতিথি পোষ্ট কমে গেছে। সবাই ব্যস্ত মনে হয়। আমি কিন্তু থেমে যাই নি। চলতে থাকবো… সাইটের ডিজাইনের জন্য আপনি-ইতো যথেষ্ঠ মনে হয়। ব্লগ সাইটেডিজাইন কি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নাকি? ডিজাইনের টাকা খরচ না করে লেখাতে ইনভেষ্ট করা ভাল মনে হচ্ছে। দ্রুত লোড করার জন্য অতি সিম্পল থিম ব্যবহার করতে পারেন। ওয়ের্ডপ্রেস ডট অর্গের ফ্রি থিমগুলোও বেশ হালকা। একটু ইডিট করে সুন্দর করে নিতে পারেন।

        1. @মাহবুব টিউটো,
          হ্যা তা ভেবে দেখা যেতে পারে, তবে আমার ব্লগটা যে বিষয়ে সে বিষয়ের লেখক পাওয়া যাবে? আমি খুব বেশি টাকা দিতে পারবো না, আপনার চেনা আমাদের দেশের কেউ আছে যে ফ্রিল্যান্সার রাইটার? থাকলে কথা বলে দেখতে পারি, পেমেন্ট খুব বেশি দিতে পারবো না তবে লেখার কোয়ালিটির সাথে মানানসই মূল্য দেয়া হবে।

          আমার পক্ষে নেটে ফ্রিল্যান্সার হাইয়ার করা সম্ভব না কারন তেমন মূলধন নেই এই ব্লগের জন্য 😆 তাই দেশী কাউকে দিয়ে করিয়ে দেশী টাকাই হস্তান্তর করতে চাই…

Leave a Comment