পৃথিবীর প্রায় সবগুলো ওয়েবের ডিজাইনই একেবারে কাছাকাছি- এমনটা কি আপনার মনে হয়? এমনটা আমার মনে হয়। অনেক বেশি সংখ্যক ওয়েবসাইট তৈরী হয়েছে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে। তার মানে ব্লগের একটা সহজ সমীকরন তৈরী হয়ে গেছে এটি। প্রথম পাতা, বিভাগ পাতা, পোষ্ট ও পেজের পাতা-এই কয়টা ডায়নামিক পাতা থাকবে-এটাই ডিজাইন। লক্ষ লক্ষ ব্লগ এই পথ অনুসরন করেন কারন এটাই সহজ সমাধান। অনেক অনেক রিসার্চের পরে এই পদ্ধতিটা অনেকের কাছে সঠিক মনে হয়েছে।
কিন্তু কিছু কিছু প্রোজেক্টে কাজ করতে গেলে আপনাকে কিছু লোকের চাহিদার কথা শুনতে হতে পারে- এমন কিছু ডিজাইন তার দরকার যা সহজ সমাধানের মধ্যে পরে না- ডিজাইন অনেক কঠিন হয়ে পরতে পারে। আপনি হয়তো তাকে আপনার ছক বাধা নিয়মের গন্ডিতে বেধে ফেলতে চাইতে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে বিষয়টি ভাল, কোন কোন সময় বিষয়টি হতে পারে সৃজনশীলতা বা নতুন কোন সৃষ্টির বাধা। আজ বেশ কিছু পয়েন্টের আলোচনা করবো যে পদ্ধতিতে এগিয়ে গেলে নতুন কিছু সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
১. নিজস্ব চিন্তা থেকে শুরু করা
কাজের শুরুটি যদি হয় এমন যে অমুক ওয়েবসাইটের মতো আমারটা হতে হবে। তাহলে ডিজাইনের মধ্যে সৃজনশীলতা আনবেন কিভাবে? নিজস্ব একটা ভাবনা থেকে ডিজাইনটি শুরু করলে বিষয়টির প্রতিটা পদে ভিন্নতা চলে আসতে পারে।
২. গন্ডির বাইরে থেকে
ওয়েব ডিজাইনের বেশ কিছু নিয়মের বৃত্তের ভেতরে বসবাস করলে চলবে না , মাঝে মাঝে নিয়ম ভাঙার চেষ্টা করতে হবে। কখনো কি ওয়েব সাইটে ভিডিও ব্যাগ্রাউন্ডের কথা ভেবেছিলেন? কখনো কি শীরোনামহীন পোষ্ট দিয়ে ব্লগ ভরা থাকবে এমন কিছু ভেবেছেন? একটা ওয়েবসাইট কিছুদিন আগে দেখলাম সেখানে বুকমার্কের একটা সুন্দর পদ্ধতি আছে। Read later দিয়ে। আমরা সাধারনতঃ Read More বাটনে ক্লিক করে ব্লগের বাকি অংশ পাঠ করি। Read later বাটনটি দিয়ে ওয়েব এপ্লিকেশনটি বেশ ভাল লেগেছে।
৩. সিএমএস ব্যবহার না করা
সিএমএস ব্যবহারের নানামূখী সুবিধা আছে। বিশেষ করে হাজার হাজার প্লাগিন, টেম্পলেট, থিমের বিশাল সমাহার আছে এখানে। ডাটাবেজের ডিজাইনটিও করা সহজ। এখন কথা হচ্ছে সৃজনশীলতার একটা বাধা হতে পারে আপনার জনপ্রিয় কোন সিএমএস-ওয়ার্ডপ্রেস, ড্রুপাল, জুমলা বা অন্য কিছু।
কেউ কেউ হয়তো বলে উঠবেন সিএমএস ব্যবহার করেও সৃজনশীল কাজ করা সম্ভব। সেটার বিপক্ষে বলবো না, হাজার হাজার টেম্পেট তো সেটারই উদাহরন। তবে সব কিছুর পরেও সিএমএস আপনাকে তাদের নিয়মের ভেতরে বেধে রাখবে।
৪. অনলাইন উদাহরন থেকে বেড়িয়ে আসা
অনলাইনে উদাহরনের চেয়ে অফলাইন উদাহরনটাকে এগিয়ে নিতে পারলে ব্যাপক ভিত্তিক কিছু খুজে পেতে পারেন। ওয়েব ব্যবহৃত টেকচার, আইকন, নেভিগেশন ইত্যাদির সাথে অফলাইন জগতের মিল অমিলের বেপারটিকে ভেবে দেখেছেন কখনো? বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টানোর পদ্ধতির সাথে নেভিগেশনের তুলানা করেছেন কখনো? অনলাইন উদাহরনের চেয়ে সেই সব উদাহনে আরো বেশি জনপ্রিয় কিছু করা যেতে পারে।
৫. কমপক্ষে একটা জিনিসের পরিকল্পনা করা যেটি অন্য কেউ চিন্তা করে নাই
ডিজাইনে এমন অন্তত একটা বিষয় রাখতে চেষ্টা করুন যা অন্য কেউ করে নি।
৬. নতুন ও পুরাতনের ব্যবহার
পুরাতন কিছু বিষয় যা ওয়েব ডিজাইনাররা ত্যাগ করেছে। নতুন কিছু জিনিস যা কেউ কেউ শুরু করেছে সেই সব দিকে খেয়ার রেখে নিজের পছন্দকে নিয়মের চাইতে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন। সৃজনশীলতা আপনার নিজের থেকে বের কে আনার চেষ্টা করুন।
অনেকে বেসিক কোডিং থেকে শুরু করে না। একেবারে বেসিক জিনিস থেকে যারা শুরু করবে তারা অনেক বেশ নিয়মর বাইরে যেতে পারবে।
৭. অন্যের সাথে শেয়ার করা
অন্যের সাথে নিজের চিন্তাটাকে শেয়ার করে আর্ও নতুন কিছু বেড়িয়ে আসতে পারে। কোন কোন দিকে বেশ কিছু পরিবর্তন পরিবর্ধন করে নেওয়া যেতে পারে।অনেক ডিজাইনার কোডিং জানেন না। তারা প্রোগ্রামারদের সাথে আলাপ করে নিজের ডিজাইনটি ওয়েবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করতে পারে
আরও পড়ুনঃ
পোষ্ট সূত্র | ছবিগুলো ছবিতে লিঙ্ককৃত সাইটের
সুন্দর লেখা .বদলে চিন্তা সবাই করে ,তাই আপনার লেখাটি অনুসরন করে বাংলাদেশের ডেভেলপাররা ওয়েব ডিজাইন নতুনত্ব আনবে এটাই প্রত্যাশা ।ধন্যবাদ
@poor children,বদলে যাচ্ছে অনেক কিছুই। ভিন্ন পথের সন্ধানে এগিয়ে যাচ্ছে অনেকে… হয়তো বা নতুনভাবে অভিন্নতাকেই আবিষ্কার করার জন্য।
@মাহবুব টিউটো, আবারো ধন্যবাদ আপনাকে .আপনার এই সুন্দর শিক্ষামূলক সাইট ডিজিটাল বাংলাদেশ দেশ গড়তে অনেকটা সহায়ক হবে ।
সৃজনশীল কিছু করার জন্য ঐ বিষয়টার ওপর জ্ঞান থাকতে হবে! অনেকে দেখি কিছুই যানে না কিন্তু সৃজনশীল কি করবে তা নিয়ে ভেবে ভেবে সময় নষ্ট করছে।
@শিবলী, না জানার মাঝ থেকেও কিন্তু বেশ কিছু জিনিস বেরিয়ে আসতে পারে। সেটাকে মেধা দিয়ে এগিয়ে নিতে পারলে দারুন জিনিস হতে পারে। এক্ষেত্রে আইডিয়া শেয়ারের দরকার আছে। যে অংশটা একজন জানে আর যে অংশটা অন্য জন জানে তাদের সমন্বয়ে হতে পারে সৃজনশীল কাজ।
—–
অনেক বেশি শিখার আগ্রহই এগিয়ে নিতে পারে। অনেক দিন পরে টিউটোরিয়ালবিডিতে মতামত দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমার কাছে “সিএমএস ব্যবহার না করা” এবং “কমপক্ষে একটা জিনিসের পরিকল্পনা করা যেটি অন্য কেউ চিন্তা করে নাই” এ দুটোই বেশ কষ্টসাপেক্ষ মনে হচ্ছে! কারণ সিএমএস ছাড়া বরতমান ইন্টারনেটে প্রায় অনেক কিছুই অসম্ভব! আর এমন কিছুর চিন্তা করা যা কেউ চিন্তা করেনি তা করতে গেলেও দেখা যায় যে সারাদিন মাথা ঘামিয়ে যা বের করলাম অলরেডী ঐরকম বা কাছাকাছি কোন কিছু কেউ বানিয়ে ফেলেছে! তাই বেশ কষ্ট সাপেক্ষ্য। তো মাহবুব ভাই, আপনি কিভাবে ম্যানেজ করেন এসব?
@ডিজে আরিফ, আমার মাথায় একটা আইডিয়া ঘুরঘুর করছে তবে শুরু করার সাহস পাচ্ছি না। মনে করুন একটা HTML ও CSS দিয়ে একটা পেজ বানালাম আবার ঐ একই পেজে ঐ পেজ তৈরির টিউটোরিয়াল লিখলাম। কিন্তু কিছু সমস্যা আছে বলে আর গেলাম না।
@শিবলী, চমৎকার আইডিয়া। তার মানে যে টেম্পলেটটি বানাবেন সেটাই হবে একটি টিউটোরিয়াল পাতা। আমি কিছু দিন আগে একটা চিন্তা করেছিলাম-“প্রতিটা পোষ্টের জন্য আলাদা আলাদা থিম/টেম্পলেট/ডিজাইন থাকবে” এটা মনে হয় অপেক্ষাকৃত সহজ।
@মাহবুব টিউটো, মাহুবুব ভাই! এটা প্লাগ ইন দেখলাম যে যে কোন পোস্ট এ কাস্টম CSS ব্যাবহার করা যায়। ঐ প্লাগ ইনটা ব্যাবহার করা যায় না; তাহলে আমারা লেখকরা প্রয়োজনে CSS ব্যাবহার করতে পারবো।তারপর CSS এ লেখা টিউটোরিয়াল গুলোতে কাস্টম CSS ব্যাবহার করে দেখাতেও পারবো।
@শিবলী, টিউটোরিয়ালবিডিতে এ জাতীয় কোন কিছুই এপ্লাই করবো না। এর এই প্লাগিনেও স্বাধীনতা পাওয়া যাবে না। প্রতিটা পোষ্টের জন্য স্ট্যাটিক HTML,CSS ইত্যাদি দিয়ে টেম্পলেট বানাতে হবে। কজটা যত কষ্টই হোক, মজার হবে।
@ডিজে আরিফ, কেউ কেউ হয়তো বলে উঠবেন সিএমএস ব্যবহার করেও সৃজনশীল কাজ করা সম্ভব। সেটার বিপক্ষে বলবো না, হাজার হাজার টেম্পেট তো সেটারই উদাহরন। তবে সব কিছুর পরেও সিএমএস আপনাকে তাদের নিয়মের ভেতরে বেধে রাখবে।
—
সৃজনশীলতা তো সবার মাঝ থেকে জন্ম নেয় না। এই দুইটা কাজ যে ওয়েব ডিজাইনে করতেই হবে- এমনটা কখনো বলা হয় নাই, তবে সৃজনশীলতার নিয়ামক হিসেবে কাজটি করলে সুবিধা পাওয়া যাবে বলা যেতে পারে।