সামাজিক নেটওয়ার্ক বনাম সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

সামাজিক নেটওয়ার্ক একটা বিশাল জনগোষ্ঠিকে একসূত্রে গেথে ফেলেছে। ফেসবুক ও টুইটারের ব্যাবহার বৃদ্ধি অনেককে ই-মেইল আদান প্রদান থেকেও বিরত রাখছে। বেশ কয়েকজন বন্ধুর সাথে ই-মেইলে যোগাযোগ হতো এখন ফেসবুকে কানেক্ট হওয়ার কারনে মেসেজ পাঠাইয়েই কাজ শেষ হচ্ছে। ব্লগের ক্ষেত্রেও কিছু দিন আগে সার্চ ইঞ্জিন থেকে যে পরিমান ভিজিটর পেতাম এখন তা থেকে বেশি আসে সোসিয়াল নেটওয়ার্ক থেকেই। বেপারটা অনেককে ভাবিয়ে তুলেছে। অনেকে ভবিষ্যতের ওয়েবকে আরও ভিন্নভাবে দেখছে, অনেকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের মৃত্যু হবে বলেও মন্তব্য করে বসেছে।

কিছু দিন আগে বিং তাদের সার্চে সামাজিক নেটওয়ার্কের সুবিধা যুক্ত করেছে। সুবিধাটি এমন যে, আপনি কোন একটি পন্য খোজলে সেই আপনার অন্য বন্ধুদের কাছে প্রিয় পন্যটিও সার্চে চলে আসবে। তারও আগে গুগল টুইটারের সাথে যুক্ত হয়ে বর্তমান সময়ে অনুসন্ধানকৃত বিষয়ে কে কি বলছে তার প্রতিবিম্বও সার্চে এনেছে, স্থানভিত্তক সার্চও নতুন একটি সংযোজন।

ওয়েবসাইট মালিকদের কাছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের গুরুত্ব অনেক, সেই সাথে সামাজিক নেটওয়ার্কের অবস্থান ও ব্র্যান্ডিংটাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে সার্চ ইঞ্জিনকে অনেক কিছুই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখি দিতে হয় এবং সঠিক জিনিসটি খুজে নাও পাওয়া যেতে পারে।

উদাহরণঃ

বেশ কিছু দিন আগে আমার এক অনলাইন বন্ধু বিভিন্ন ছবিগ্যালারী নিয়ে কাজ করছিল। তাকে আমি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের উপরে গুরুত্ব দিয়ে ভাল করে কনটেন্ট লিখতে বললাম। অথচ সে তা করলো না। তার কথা হচ্ছে- ছবি গ্যালারীতে আবার লেখারেখির কি দরকার। Alt ট্যাগ ব্যাবহার যদিও সে করেছে তার পরেও সার্চ ইঞ্জিন তাকে তেমন সহায়তা করে নি। তার কথা হলো খুব কম পরিমান ও ভিজিটর আমি সার্চ ইঞ্জিন থেকে পাই। অথচ এসইও এরর দিকে এত বেশি গুরুত্ব না দিয়ে যদি আমি নিজের মতো করে কাজ করে যাই এবং সামাজিক নেটওয়ার্কে আমার সাইটের প্রচারনা চালাই তহলে বেশ কিছু লোক একত্রিত হয়ে যায় যারা আমার সাইটটি পছন্দ করে ও বার বার আসে। যাদের পছন্দ না তারা আর আসে না।

সার্চ ইঞ্জিন রোবটগুলোর কাছে ডিজাইন ও ফ্লাস বা প্রেজেন্টেশনের কোনই গুরুত্ব নেই, যদিও এগুলোতেই অনেক অনেক লিখিত কনটেন্ট থাকে। এই কনটেন্ট ও তার মান অনুধাবন করা রোবটের কাজের বাইরে।

সামাজিক নেটওয়ার্ক বনাম সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

সার্চ ইঞ্জিনের দিকে তাকিয়ে মান সম্পন্ন লেখা হয় না

বেশ কিছু দিন আগে আমি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের ৫টি ভুল প্রয়োগের অপচেষ্টার কথা বলেছিলাম। সেখানে বেশ কিছু লোকের সার্চ ইঞ্জিনের প্রতি অতিরিক্ত খেয়াল রাখতে গিয়ে বেশ কিছু কাজ করে তার তালিকাটি সম্পর্কে বলেছিলাম।
অনেকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য ব্লগে বেশ কিছু কাজ করেন, যথা-

  • ১. শিরোনামটি কীওয়ার্ড দিয়ে ভরে রাখা
  • ২. কনটেন্টে কীওয়ার্ড দিয়ে ভরে রাখা:
  • ৪. অতিরিক্ত অভ্যন্তরীন লিংকিং

কিন্তু বেপারটাকে এভাবে না দেখে সবসময় বুঝতে হবে যে মানসম্পন্ন লেখা কারো দিকে তাকিয়ে করা হয় না। এমনও হতে পারে অনেক ভাল লেখাগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন অনেক পেছনের তালিকায় রেখেছে আবার নিন্ম মানের পোষ্টও অনেক সামনে থাকতে পারে।

সামাজিক নেটওয়ার্কে একটা বিষয়ের প্রচার কিভাবে হয়?

কোন একটি আর্টিকেল লেখার পর সেটি যদি ভাল লাগে তাহলে সেটি সম্পর্কে তার পাসের বন্ধুকে শেয়ার করে। সেটি গুরুত্বহীনমনে হলে সেটা কাউকে বলে না। এটাই মানুষের স্বভাব।

কিছু কিছু পোষ্ট অনেক মানুষের মধ্যে সারা জাগিয়েছে কিনা তা অবশ্য বেশ কিছু পদ্ধতিতে বুঝা যায় আমি মূলতঃ ফেসবুকে শেয়ার ও লাইক সংখ্যা ও মতামতের মাধ্যমে বুঝতে পারি। এখন যদি এমন হয় যে বিষয়টি অনেকবার শেয়ার করা হয়েছে অথচ সেই বিষয়টিতে সার্চ করার পরে পোষ্টটির লিংক প্রথম পাতায় চলে আসলো না। সার্চ ইঞ্জিন তো কী ওয়ার্ড ডেনসিটি সহ বেশ কিছু বাস্তব জিনিসের পরিপ্রেক্ষিতে করা হয়। আর্টিকেলটিতে যদি সেই সব শব্দ বেশি হয় যা লিখিত বিষয়টির সাথে অতটা সমঞ্জস্যপূর্ণ নয় তাহলে তো পাঠক সার্চ করেও এই ভাল লেখাটি খুজে পাবে না।

সামাজিক নেটওয়ার্কে একটি জিনিস বেশি দিন চোখের সামনে স্থির থাকে না। এর মাধ্যমে কেউ প্রয়োজনীয় বিষয়টি অনুসন্ধানও করে না। বরং অনেক সময় প্রয়োজনীয় বিষয়ের সাথে যুক্ত থাকে। তাই অনেক পরে সেই বিষয়টির অনুসন্ধান করতে হরে প্রত্যেকে সার্চ ইঞ্জিনের দিকেই ধাবিত হয়।

এত সব আলোচনায় অনেকে মনে করতে পারেন যে আমি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের বিরুদ্ধে কথা বলছি। বরং সেটা না, আমি মূলতঃ এ জিনিসটা বুঝাতে চেয়েছি যে, এখন এমন একটা সময় এসেছে যখন মানুষ নিজেই কোনটি ভাল, কোনটি মান সম্পন্ন তা নিজেই বলতে পারে। সারা বিশ্বে সেটা প্রচার পেতেও সময় লাগে না। ইদানিং কালে গুগলে কোন বিষয় সবচেয়ে বেশি অনুসন্ধান হলো, টুইটারে বা ফেসবুকে কোন বিষয়ে বেশি কথোপকথন হলো সবই মানুষের হাতের মুঠোয়। সাইটের নেটওয়ার্কি ও অপটিমাইজেশনে অনেক অনেক বিষয়ই খেয়াল রাখা দরকার হয়ে পরেছে।

আরো পড়ুনঃ

6 thoughts on “সামাজিক নেটওয়ার্ক বনাম সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন”

  1. ব্লগিং করে গুগগুল এডসেন্স এ আয় করতে হলে SEO এর কোন বিকল্প নাই তাই ভালো পোষ্ট না লিখতে পারে না তাই অনেক ভালো লেখক বিক্রেতা হয়ে যায়।

    1. @শিবলী, “ভালো লেখক বিক্রেতা হয়ে যায়” বিষয়টা বুঝতে পারলাম না। ভাল লেখক বিভিন্ন ভাবে আয় করতে চাইতেই পারে। বিজ্ঞাপন বা এফিলিয়েট বা ফ্রিল্যান্স লেখক বা অন্যকোন উপায়ে যদি আয় করে বা করতে চেষ্টা করে সেটা খারাপ কিছু না। আমার নিচের পোষ্টটিতে এ বেপারে বেশ কিছু কথা আছে।

      “ব্লগ থেকে অর্থ সংগ্রহ করার চেষ্টা করা উচিৎ”- কেন?

      1. @টিউটো, এখানে আমি বোঝাতে চাচ্ছি প্রফেশনালরা “ভালো পোষ্ট” করার চেয়ে “আয় করা”টা বেশী করে দেখছে। ফলে অনেক ভালো ভালো পোস্ট আমারা হারাচ্ছি!

        1. @শিবলী, এই বিষয়টাকে একটু ভিন্নভাবে দেখলে কেমন হয়?
          অনেকে টাকা আয় করার কারনেই নিয়মিত ব্লগিং করে যাচ্ছেন। অন্যথায় সে হয়তো ব্লগে এত বেশি সময় দিত না, তার কর্মক্ষেত্র খুজে নিয়ে অন্য কোথাও বেশি সময় দিতো।
          আপনার কথাটা অনেক সময় ঠিকও বটে, কৃষকরা অনেক সময় বেশি উৎপাদনের জন্য কিৎনাশক ব্যাবহার করে…এরকমভাবে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির কারনে লেখারমান মান কমতেও পারে।

  2. মানিক কুমার

    ঈদ মোবারক

    আমি আপনাদের এবং আমার খুব প্রিয় টিউটরিয়ালবিডি থেকে নিজে অনেক কিছু জানতে পেরেছি এর জন্য আপনাদে সবাইকে ধন্যবাদ ।

    আজ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন লেখাটা পরলাম ভাল লাগলো
    আমার চাকরি চলে যাবার পড় থেকে YottaCash Sports Affiliate marketing করছি
    খুব একটা ভাল করতে পারছিনা তাই এবার ঈদ এং পুজায় বাড়ি যেতে পারলাম না
    কি ভাবে আরো ভাল করে প্রতিটা পোষ্ট অপটিমাইজেশন করা যায় এ সমন্দে কিছু পোষ্ট বা টিপস দিলে অন্তত আমার জন্য ভাল হয় ।

    সবাইকে আবারো ঈদ মোবারক ভাল থাকবেন

    1. @মানিক কুমার, আমি অবশ্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের বেপার খুব বেশি লেখি না, তবে ইউজার ফ্রেন্ডলি কনটেন্টের বেপারে হয়তো পরবর্তিতে লিখবো। মতামত দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

Leave a Comment