ব্লগারের কন্ঠস্বর কেমন হওয়া উচিৎ

কথা বলাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, সবাই সুন্দরভাবে সঠিক সময় সঠিক কথাটি বলতে পারে না। আর কথা বলার ধরনটাও এক এক জনের এক এক রকম হয়। ব্লগারদের বেপারে এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কথা বলতে গিয়ে সঠিক সময়ে সঠিক উপমা,পরিসংখ্যান নিজের যুক্তি উপস্থাপনা করার মতো করে ব্লগও লিখতে হয়।

ব্লগে এক এক জনের কন্ঠস্বরে এক এক রকম আমেজ পাওয়া যায়। তবে আমি নিজের বাস্তব কিছু বিষয়ের সাথে ব্লগারের কন্ঠস্বরের মিল পাই, শিক্ষনীয় অনেক কিছুই পেয়েছি-আজ তাই বলবো।

১. ক্যানভাসারঃ

ব্লগারের কন্ঠস্বর কেমন হওয়া উচিৎ
ছবি সূত্রঃ ফ্লিকার

ছোট বেলা বাজারের আসে পাসে বেশ কিছু ক্যানভাসারের ঔষধ বিক্রি দেখতে ভিড় করতাম। ইদানিং সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার কথা চিন্তাও করি না,তবে সেদিন ইচ্ছা হলো একটু দাড়াই। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অবশ্য একটু ভিন্নদৃষ্টিভংগিতে দেখলাম। সবচেয়ে অবাক করার বেপার হলোঃ লোকটি অকপটে অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে সত্য মিথ্যা মিলিয়ে অত্যন্ত বিচক্ষনতার সাথে উপমা দিয়ে নিজের যুক্তি উপস্থাপন করছে।

যারা এইসব কেনভাস পছন্দ করে তারাই শ্রোতাদের মধ্যে তাদের সংখ্যাই বেশি। হাজার হাজার শিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত, অশিক্ষিত মানুষের মধ্য থেকে একটা ভক্তগুষ্টিই ক্যানভাসারের নিয়মিত শ্রোতা। আর তাই ক্যানভাসার যে দিকে কথা বলে সেই দিকটাই শিংহভাগ লোকের পছন্দ হয়।

আমি অবশ্য একটা জিনিস শিখতে পারলাম যে, আমার ব্লগের পাঠকদের শিংহভাগই আমার লেখা পছন্দ করে,  আর তাই তারা নিয়মিত এখানে আসে। এবং সে কারনেই কোন কথা বলতে গিয়ে ইতস্তঃ করা আমার মোটেও উচিৎ নয়।  কথাটিতে যেন আমার আত্ন বিশ্বাস খুজে পাওয়া যায়।

২. রাজনীতিবিধদের বক্তব্যঃ

ব্লগারের কন্ঠস্বর কেমন হওয়া উচিৎ
ছবি সূত্রঃ পাঞ্চস্টক

ইন্টারের সময়টাতে আমি কিছুটা এক্সট্রোভার্ট (আত্নকেন্দ্রিক নয় এমন) হওয়ার চেষ্টা করি। সেই সময় মুক্তিযোদ্ধা কল্যান ট্রাষ্টের আয়োজনে একটি বক্তব্য প্রতিযোগিতায় নিজের অবস্থানটা ভাল করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের বক্তব্য অনেক বার শুনেছি ও প্রায় মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল। ইদানিংও বেশ কিছু মান সম্পন্ন বক্তব্যের মধ্যে তথ্যপূর্ণ পরিসংখ্যান, ভাষার সুন্দর ব্যবহার আমার হৃদয় কেড়ে নেয়।

ব্লগের মধ্যে সুন্দরতম ভাষা ব্যবহার, সঠিক তথ্য ও পরিসংখ্যানও মান সম্পন্ন ব্লগের জন্য অত্যাবশ্যক।

৩. শিক্ষকঃ

ব্লগারের কন্ঠস্বর কেমন হওয়া উচিৎ
ছবি সূত্রঃ ইউসিএফ

কলেজের বাংলা স্যারের কথা আজও ভুলতে পারি নি। তিনি পদ্য বা গদ্যের একটি বাক্য দিয়ে ক্লাসটা শুরু করতেন। তার পর সেই বাক্যের উপরই ৪৫ মিনিটের ক্লাসটা চলতো, আলোচনার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যেতে যেতে কত যে ঘটনার অবতারনা হতো, ক্লাস শেষে ঠিক বাক্যটিতে চলে আসতো। আমরা কয়েক জন এই আলোচনার নিয়মিত ও সক্রিয় সঙ্গি হতাম। একটুও বোরিং লাগতো না, ক্লাসটা। আলোচনা আর প্রশ্নউত্তরের বেপারটা ছিল আরও মজাদার।

ব্লগারকেও সঠিকভাবে আলোচনা করতে হয়। কোন একটি বিষয়কে অগোছালোভাবে ও অতি সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করে শেষ না করে বিবরণসহ প্রয়োজনে উদাহরনসহ আলোচনা করতে হয়। মতামতের সাথে নিজেকে রাখতে হয় সমপৃক্ত।  আবার বেশ কিছু ব্লগ যেমন- দেখেছি যেখানে মতামতেই মূল আলোচনা হয়। মৌলিক বিষয়টি লেখক লিখে যান।

আরও আনেকগুলো বিষয়ের সাথে ব্লগারের লিখুনির সহজ মিল ও শিক্ষনীয় বিষয় আছে। আপনারাও আলোচনার অংশিদার হোন।

1 thought on “ব্লগারের কন্ঠস্বর কেমন হওয়া উচিৎ”

  1. হু! লেখার ধরণটা একেক জনের একেন মতন। আমিও ভালো লেখার চেষ্টা করি কিন্তু পারি না। এটা মনে হয় কিছুটা জন্মগত।

Leave a Comment