মহান চিন্তাগুলো ব্যর্থ হচ্ছে কেন?

ইন্টারনেট একটি দ্রুত বর্ধনশীল ও নতুন নতুন চিন্তার প্রকাশ মাধ্যম। এখানে প্রতি মুহুর্তে হাজার হাজার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আর অনেকে খেলতে খেলতে এমন কিছু করে ফেলেছে যা পরবর্তিতে বিশ্য মাতিয়ে দিয়েছে। এরকম হাজারও নতুন ভাবনার মধ্যে গুটি কয়েকটাই সফল হতে দেখেছি। বেশ কয়েকদিনে অনেকের নতুন উদ্যোগের খরবটা ফোনে বা চ্যাটিংয়ে অনেকে জানায় তার পর আর খবর থাকে না। অনেক সময় দেখা যায় এমন  কোন উদ্যোগ নিয়েছে যা অন্য কেউ আগেই করে ফেলেছে বা একই সাথে কয়েকজন করছে-কেউ কারো খবর রাখে নাই। একই রকম উদ্যোগ নিয়েও কেউ সফল কেউ আবার ব্যর্থ -এমনও হতে পারে।

পজিটিভ চিন্তাই কি যথেষ্ঠ?

অধিকাংশ লোকই  কোন একটি ভাল কাজের শুরুতে অনেক আত্নবিশ্বাস নিয়ে কাজটি শুরু করতে বলে। আর এটি অনেক সময় হিতে বিপরিত হতেও দেখেছি আমি।

বেশ কিছু দিন আগে আমার একটি লেখায় বলেছিলাম, অতিরিক্ত আত্নবিশ্বাস আপনার প্রোজেক্টের জন্য এক সময় ক্ষতির কারন হবে।

সম্পূর্ণ বাস্তব সম্মত ধারণা নি নিয়ে কাজে লাগলে অনেক বড় বড় চিন্তারও মৃত্যু হওয়া স্বাভাবিক।

ইঁদুরের ফাঁদ

“Build a better mousetrap, and the world will beat a path to your door.” নতুন কোন প্রজেক্টে টাকা ঢালার বেপারে কথাটা গ্রহণযোগ্য। মনে করুন আপনি কোন একটি ওয়েব সাইট বানানোর ও তা থেকে আয়ে চিন্তা করছেন। ভবছেন কিছু টাকা প্রথমে ইনভেস্ট করে ডোমেইন ,হোস্টিং ইত্যাদি কিনবেন তার পর লোক নিয়োগ দিবেন , কাজ হবে টাকা আসবে। সর্বমোট খরচের চেয়ে আয় বেশি হবে-যেটা বেশি হবে সেটাই আপনার লাভ। আসলে একই সময় আপনার চেয়ে মেধাবী কিছু লোক (যদিও কেউ কারো চেয়ে বেশি মেধাবী নয়- এক এক জন এক এক দিকে মেধাবী) হোস্টিং ব্যবসা করছে। তারা ভবছে, অধিকাংশ লোক ওয়েব সাইট বানিয়ে লাভবান হবে না এবং ডোমেইন ও  হোস্টিং এর দাম প্রথমে দিতে হবে তাই এটাই সহজ ও ঝামেলা মুক্ত ব্যবসা।

অধিকাংশ নতুন প্লানেই পৃথিবীর মানুষগুলোকে সেই সার্ভিসের সাথে জরিয়ে ফেলার একটা ফাঁদ বানানো হয়। আর এই ফাঁদে দুনিয়ার লোককে না ফেলতে পেরে নিজেই এই ফাঁদে পরে যায় অনেকে।

উদাহরণ: ফানেল মার্কেটিং

আর এ ফাঁদের বেপারটা খুব সহজে বুঝতে পারবেন  যদি ফানেল মার্কেটিং বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর সাথে কারো পরিচয় থাকে। সেখানে মূলত: সফল হওয়ার দৌড় চলে….সবাই দৌড়ায় দৌড়ানোর পুরষ্কারটা দেওয়া হয় দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের থেকেই । বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানই এরকম টাকার ফাঁদ তৈরী করে টাকা ধরতে সফল হয়েছেন। আবার লক্ষ লক্ষ লোক এই ফাঁদে টাকা খরচ করে ব্যর্থ। আপনি যদি এ সম্পর্কে ফানেল সেই প্রতিষ্ঠানে কাউকে জিজ্ঞাসা  করেন তাহলে তারা বলবে, যারা ব্যর্থ হয়েছে তারা বেপারটা বুঝতে পারে নাই । আসলে আমিও মনে করি বেপারটা তাই।

নিজের চিন্তাকে শেয়ার করা:

ওয়েবে কাজ করার সবচেয়ে সুবিধা জনক দিক হলো যে কোন জায়গা থেকেই কাজ করা যায়। এ জন্য অনেকে নিজের একটি উদ্যোগ নিয়ে নিজেই কাজ শুরু করে , অন্য কাউকে জানায় নি বেপারটা। এ ক্ষেত্রে কয়েক ধরেনর ঘটনা ঘটে।

১. নিজের আইডিয়াটা সবাইকে জানালে আইডিয়া চুরির ঘটনা ঘটতে পারে। নিজের উদ্যোগটি কোন কারনে দ্রুত বাস্তবায়ন কারা সম্ভব না হলে অন্য কেউ এই কাজ শুরু করতে পারে।

২. অনেকে নিজের কাজটি বাস্তবায়ন করতে অন্যকে সঙ্গে নিতে চায় না বা অংশিদারের ভিত্তিতে কাজটি করতে চায় না। নিজের মালিকানা নিজেরই থাক-ভাবটা এরকম। কিন্তু আমি মনে করি অনেকে মিলে কাজ করলে কাজটি সফল হওয়া সহজ। একা ১ টাকা আয় করা ভাল না দুই জনে ৩ টাকা আয় করা ভাল হবে? নিজের একটি ওয়েব ব্যবসা শুরু করতে গেলে এ বিষয়গুলো অবশ্যই ভাবতে হবে।

এ বিষয়ে আরো কিছু দরকারী কথা আছে এখানে পড়ে দেখতে পারেন।

আপনিই সবার উর্ধ্বে?

এটি অবশ্যই মনে রাখতে হবে যেহেতু আপনার কাছেই আছে  একটি নতুন আইডিয়া তাই আপনিই সবার উর্ধ্বে। অবম্য চিন্তাটিকে বাস্তবায়ন করার সময় যে ধাপগুলোতে পা রাখতে হবে সেখানে আপনি সবার উপরে নাও হতে পারেন। তাই বাস্তবায়নের সময় অনেক কিছুই শিখতে হতে পারে অন্যের কাছ থেকে। আর অনেকের অনেক চিন্তাই সফলতার মুখ না দেখার অণ্যতম কারন সেই চিন্তাটিকে সফলকারা উপায় সমুহ না জানা।

আশা করি বিষয়গুলো নতুন উদ্দোক্তাদের কাজে লাগবে। আপনাদের মতামত দিয়ে বিষয়টিকে আরও পরিষ্কার করবেন আশা রাখি।

6 thoughts on “মহান চিন্তাগুলো ব্যর্থ হচ্ছে কেন?”

  1. আসলে মানুষ যা চিন্তা করে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা হয় না। আর তখন দেখা দেয় বিপত্তি। ধৈর্য ধরা আসলেই খুব কঠিন কাজ। বেশিরভাগ মানুষেরই এই গুনটি নেই। যাদের আছে… তারাই বেশিভাগ ক্ষেত্রে সফলতা পায়।

    1. @ইমতিয়াজ মাহমুদ, একটা জিনিস আমি লক্ষ করেছি, একজনের একটি আইডিয়া অন্যের কাছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মূল্যহীন। আর কাজটি করতে গেলে অনেক সময় নিজের চিন্তাটি বাস্তবায়নে অন্যের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়। অনেক ক্ষেত্রেই অন্যের সহযোগিতার বেপারটা কিছুদিন পরেই নিভর্রশীলতা হয়ে দাড়ায় আর তখনই মৌলিকত্ব হারিয়ে বিষয়টি গতানুগতিক ধারার দিতে চলে যায়।
      বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠানকেই দেখেছি যারা ভিন্নধর্মী সমবায় সমিতি করতে গিয়ে কিছুদিন পরে সেই আগের অবস্থানেই চলে এসেছে। বেশ কিছু ওয়েবেরও একই আবস্থা আমি লক্ষ করেছি।

  2. সুমন দেব

    খুবই ভালো লেগেছে। আশাকরি ব্যাপারটা যারা গুরুত্বসহকারে পুর্বে কখনো দেখেনি এখন থেকে একটু চিন্তা করে দেখবেন এবং নতুন প্রজেক্ট নিয়ে পরিকল্পনানুসারে এগিয়ে যাবেন। ধন্যবাদ লেখককে।

    1. @সুমন দেব, নিজের চোখে অনেক গুলো ভালো উদ্যোগ ব্যর্থতায় পরিনত হতে দেখেছি। নিজেও কিছু কিছু উদ্যোগ নিয়ে লক্ষ্যে পৌছতে পারি নি তাই উদ্যোগের সময় বেপারগুলো ভেবে নেওয়া উচিৎ।

Leave a Comment