বড় পীর আবদুর কাদের জিলানি (রহ.) জিলানী

১। বড় পীর আবদুর কাদের জিলানি (রহ.) জন্ম ও বাল্যকাল

বড় পীর আবদুর কাদের জিলানি (রহ.) ১ম রমজান ৪৭১ হিজরীতে ইরানের অন্তরগত জিলান জেলার কাসপিয়ান সমুদ্র উপকূলে নাইদ নামক স্থানে বড় পীর আবদুর কাদের জিলানি (রহ.) জন্মগ্রহন করেন। আমাদের আখিরি নবি হযরত মোহাম্মদ (সা) এর ওফাতের পর দীন ইসলামের ঝান্ডা ইড্ডীন রাখার জন্য ওয়ারেসাতুল আম্বিয়া বা নগনের ওয়ারেছ হিসেবে এই দুনিয়াতে যুগে যুগে যে ওলি-আল্লার আর্বিবাব ঘটেছে তাদের মধ্যে হযরত মহিইদ্দিন আবদুল কাদের জিলানি (রহ) অন্যতম একজন এবং অনেক ক্ষমতার অধিকারি। সে কারনেই তাকে গাউসুল আজম বলা হয়।তার পিতার নাম হযরত আবু ছালে মুসা জাঙ্গির (রহ.)। এবং তার মাতার নাম সোঃ উলমুল খোয়ের ফাতেমা (রহ.)।

তার মাতা !ছিলেন ইমাম হোসেন (রহ.) এর বংশধর সৌয়দ আবদুলা সাওমার কন্যা।যিনি ছিল একজন বুজুরগ এবং ধার্মিক। যে তারে আবদুল কাদের জিলানি ভূ-পৃষ্ট হয় সে তারে তার বাবা সু-মধুর কন্ঠে আওয়াজ শুনতে পায়।সে শুনতে পায় তাকে বলছে হে আবু ছালে মোমার জীবন ধন্য। তোমার ঘরে হযরত মোহাম্মদ (সা) এর পেয়ারা বন্ধু। তুমি ওই বালকের নাম রাখবে আবদুল কাদের জিলানি।হযরত আবদুল কাদের জিলানি খুব ছোটকালে তার বাবা মারা যায়।কাজেই তার মাতার কাছে প্রথম শিক্ষা শুরু হয়।তাকে কুরআান পাঠের জন্য হুজুরে কাছে পাঠালে তার ওসতাদ তাকে প্রথম লাইন বলে আর সে তার বলা পড়াসহ এর পরের পড়াগুলো পর পর করে পড়তে থাকে।তার ওসতাদ তো শুনে অভাক। তারপর সে আস্তে আস্তে তার কুরআন পড়া শুনেন। পড়তে পড়তে ১৮ পারা পর্যন্ত পরে সে থামলেন।তার মা ১৮ পাড়া কুরআন মোখস্ত ছিল।

২।বড় পীর আবদুর কাদের জিলানি (রহ.) জিবনের মূল্যবান সময়

আল্লাহর কুদরতের কারনে সে মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় ১৮ পারা কুরআন মোখস্ত করেন।আবদুল কাদের জিলানিকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বাগদাত শহরে পাঠায়।তার মা যাওয়ার সময় তার জামার ভিতরে সিলাই করে মোহন দেয়। রাস্তায় এক দল ডাকাত আসে এবং সাইকে বলে সবকিছু দিয়ে দিতে।তখন সে ডাকাত দের বলে দেয় তার জামার ভিতরে মহর রয়েছে।এই সত্য কথা শুনে ডাকাতের সদার তাকে ছেড়ে দেয় এবং সবাই মিলে মুসলমান হয়ে যায়। এবং তারা সত পথে জীবন পরিচালনা করেন। তিনি তার পীর হযরত আবু সায়েদ মাকজুবি (রহ) এর নিকট থেকে এলমে মারেফাত বা আদ্দাতিক শিক্ষা লাভের জন্য কঠিন পরিক্ষায় নিজেকে পরিচালনা করেন।তিনি টানা ২৫ বছর ইরাকের গুহায় সাদনা করেছিলেন।তিনি সারাক্ষন মোরাকাবায় মসগুল থাকতেন।সে সময় তিনি প্রায়ই শাখ পাতা খেয়ে জীবন ধারন করেছিলেন।সে প্রায় অনেক দিন একপায়ে দারিয়ে রাতের বেলা কুরআন খতম করেছেন।তার সারাক্ষন অযু অবস্থায় থাকতেন। যদি অযু ভেঙ্গে যেত তাহলে ততক্ষনাত অযু করে নিত।শুনা যায় তিনি এশার অযু দিয়ে ফজরের নামায আদায় করে।একদিন তাকে রোজায় একই দিনে অনেক জন দাওয়াত দিয়েছেন।তিনি সম্মান রক্ষার্থে সবার দাওয়াত গ্রহন করে। সন্ধায় তিনি তার অলৌকিক শক্তিতে একই সাথে সবার বাসায় গিয়ে ইফতার করে।এবং পরে সবাই বলে আবদুল কাদের জিলানি আমাদের ঘরে ইফতার করেছেন।আরেক জন বলে না আমার ঘরে ইফতার করেছেন।এই রকম আরো অনেক অলৌকিক ঘটনা রয়েছে আবদুল কাদের জিলানির। একদিন আবদুল কাদের জিলানি রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন তখন হঠাৎ দেখে রাস্তার সাথে এক বুড়িমা বসে কান্না করছিল।তখন আবদুল কাদের তার কাছে গিয়ে বলে আপনি কান্না করছেন কেন। তখন বুড়িটি বলে আমি ১২ বছর ধরে সবাই কে বলে আসছি কিন্তু লাভ হয় না কেউ আমার কান্না বন্ধ করতে পারে না। তাই আর কাউকে বলা যাবে না। আবদুল কাদের জিলানি বলেন আচ্ছা শেষ বারের মতো আমাকে বলে দেখেন আপনার কষ্ট দুর করতে পারি কিনা। তখন বুড়ি বলেন ১২ বছর আগে আমার ছেলে এই সমুদ্র দিয়ে বিয়ে করে বর যাত্রী নিশে আসছিলেন কিন্তু সেখান থেকে সবাই বিলিন হয়ে গেছেন। এখনো ফিরে নাই। তাই আমি আমার ছেলের জন্য এখানে এখনো বসে বসে কান্না করি। আবদুল কাদের জিলানি কথা শুনে আল্লার কাছে দোয়া করেন তাদের সবাইকে ফিরিয়ে দিতে। এবং আল্লাহ সবাইকে আগের চেহারায় ফিরিয়ে দেয় তার কাছে।হিজরি ৫৬১ সালে ১১ রবিউসসানী আবদুল কাদের জিলানী (রহ) পরলোক গমন করে।তার বয়স ছিল ৯১ বছর বয়স।

Leave a Comment