দেশঃ ভারত এর ইতিহাস

১। ভারতের আদি পরিচিতি

ভারত দেশটি হচ্ছে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ।এই দেশটি প্রাচীন কালে কেমন ছিল তা আমরা আজকে জানব।ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা হচ্ছে সিন্ধু সভ্যতা।এই সভ্যতাটি প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগের সভ্যতা।এই বংশের নাম ছিল দ্রাবিড় বংশভূত।এই সিন্ধু সভ্যতার সন্ধান পায় ১৮৫৭ সালে জন বিন্ডন এবং ব্রিলিয়ন বিন্ডন।তারা দুইজন করাচি এবং লাহরের মাঝখান দিয়ে একটি রেললাইন তৈরি করতে যায়। তখনই তারা দুইজন দুইটি প্রাচীন শহরের সন্ধান পায়। শহর দুইটির নাম হচ্ছে হরপা এবং মহেঞ্জোদারো।হরপা শহরটি রবি নদীর তীরে অবস্থিত ছিল।এবং মহেঞ্জোদারো শহরটি সিন্ধু নদী তীরে অবস্থিত। সিন্ধু সভ্যতা হলো একটি নগর কেন্দ্রিক সভ্যতা।এই খানে পাকা রাস্তা এবং জলের ভালো ব্যবস্থা দেখা গিয়েছিল।এই খানের মানুষেরা ইটের ব্যবহার জানতো এবং বাড়ি বানাতো।

এদের থেকেই ইট এর আবিষ্কার হয়। গুজরাটের বন্দরের নাম হচ্ছে লোথাল। মহেঞ্জোদারো সবচেয়ে বড় ভবন হলো স্থানাগার। সেখানে একটি এবিশাল বড় স্থানাগার পাওয়া যায়। একে ইংরেজিতে গ্রটবাট বলা হয়।সেখানে কাসার তৈরি নর্তকির মূর্তি পাওয়া গিয়েছিল।সিন্ধু সভ্যতার প্রধান অর্থ ব্যবস্থা ছিল কৃষি ও পশু পালন।সিন্ধু সভ্যতায় লোহা বাদে সকল কিছু ব্যবহার দেখা গিয়েছিল।সিন্ধু সভ্যতার মানুষেরা কাঠের তৈরি নাঙ্গল দিয়ে হাল চাষ করতেন। কারন তারা লোহার ব্যবহার তখন জানতো না।

সিন্ধু সভ্যতার লোকেরা সর্বপ্রথম কার্পাস উৎপাদন করেছিল।এই সিন্ধু সভ্যতা কিভাবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে তা এখনো স্পষ্ট ভাবে যানা যায় নি।কিন্তু ধারনা করা হয় সিন্ধু নদীতে বন্যার কারনে সিন্ধু সভ্যতা হারিয়ে গিয়েছিল।ভারতে সবার প্রথম ইরানের লোকেরা প্রবেশ করে।যাদের আমরা আর্য বলে চিনি।এরপর ভারতে আর্যদের প্রবেশ ঘটে।তারা দ্রাবিড়দের পরাজিত করে জায়গা করে নেয় ভারতে এবং শাসন ব্যবস্থা চালু করে।আর্যরা আজ থেকে প্রায় ৩২০০ বছর আগে প্রবেশ করে।এদের সভ্যতাকে বৈদিক সভ্যতা বলে।

এই বৈদিক সভ্যতার প্রধান অর্থব্যবস্থা হচ্ছে পশুপালন।বৈদিক সভ্যতায় প্রথম লোহার ব্যবহার করা হয়েছিল।তখন মানুষের ঘোড়ার ব্যবহার করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেত।সিন্ধু সভ্যতা যেমন ছিল নগর কেন্দ্রিক সভ্যতা অন্যদিকে বৈদিক সভ্যতা ছিল গ্রমীন সভ্যতা।এরপর আস্তে আস্তে এটি নগর সভ্যতায় পরিনত হয়।

২। ভারতের শাসনামল ও বিভিন্ন ইতিহাসের সুচনা

এরপর পুরো ভারত বর্ষ ১৬টি রাজ্য বিভক্ত হয়ে যায়।এই রাজ্যগুলোকে বলা হতো মহাজন পদ।এই ১৬টি মহাজন পদের মধ্যে কয়েকটির নাম উল্লেখ করা হলো মগধ অঙ্গ কাশি কৌশল্য মজ্জি চেদি বৎস কুরু পাঞ্চাল শরসেন গান্ধার কম্বোজ অস্মোক অবন্তি এবং মৎস ইত্যাদি।এগুলোর মধ্যে মগধ ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী।

এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজ্য ছিল অবন্তি।মগধ রাজ্য সবচেয়ে শক্তিশালী রাজ্য হওয়ার কারন ছিল সেখানের মানুষের জীবিকা নিবার্হ করার জন্য কাঠ ও বিশাল জঙ্গল ছিল সেখান থেকে তারা পশু নিয়ে যুদ্বে ব্যবহার করতো।তারাই সর্বপ্রথম যুদ্বে হাতির ব্যবহার করেছিল।এরপর এই মগধে অনেক রাজারা এসেছিল।তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ১৬ টি মহাজনপদ কব্জা করা।একমাত্র একজন রাজা যে এই ১৬ টি মহাজন পদ কব্জা করেছিল।তার নাম হচ্ছে অশোক।মগধের সবচেয়ে প্রাচীন রাজধানী ছিল রাজগৃহ।মগধের সে প্রথম রাজবংশ শাসন ব্যবস্থা চালু করে তার নাম হচ্ছে হযর্ঙ্ক বংশ।এই হযর্ঙ্ক বংশের প্রথম রাজা ছিল বিম্বিসার। তিনি ছিলেন একজন বৌদ্ব ধর্মের মানুষ।অজাতশত্রু তাকে হত্য করে তার জায়গা দখল করে। হযর্ঙ্ক বংশের পরে এলো নাগ বংশ।

এই নাগ বংশের প্রথম রাজা ছিল শিশু নাগ।এরপর আসে নন্দ বংশ।এই বংশকে স্থাপনা করে মহাপদ্ম নন্দ বংশ।নন্দ বংশের শেষ রাজা ছিল ধননন্দ।এই ধননন্দকে পরাজিত করেছিল চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য বংশ। এরপর মৌর্য বংশ শাসন চালু করে। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের গুরু ছিল চানক্য।এই চানক্য একটি গুরুপ্তপূর্ন বই রচনা করেছিলেন।যেই বইটির নাম ছিল অর্থশাস্ত্র।এই বইটি মূলত রাজনীতি নিয়ে লেখা হয়েছিল।চন্দ্রগগুপ্তর শাসন কালে সেলুকাস নিকেটার ভারত আক্রমন করে।এই সেলুকাস নিকেটারের রাজদূত ছিল মেগাস্থিনিস।তিনি একটি বিখ্যাত বই রচনা করে।তিনি তার কন্যকে নিয়ে এখানে এসেছিলেন কণেলিয়া নাম। রাজা চন্দ্রগুপ্ত তার মেয়ে কে পছন্দকরে বিবাহ করে। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য তার জীবনের শেষ দি কাটিয়েছিল শ্রবন বেল গোলা তে। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের মৃত্যু শ্রবন বেলা গোলাতে উপবাসের দরুন হয় এরপর সিংহাসনে বসে চন্দ্রগুপ্তের ছেলে বিন্দুসার।তিনি জৈন ধর্মের লোক ছিল। তখন সেখানে যুদ্ব শুরু হয়। তখন বিন্দুসার এর পুত্র অশোকে পাঠায় তাদের যুদ্বের জন্য সৈনিকদের প্রস্তুত করে রাখার জন্য।বিন্দুসার ১০টি মহাজনপদ দখল করে নিয়েছিল।বিন্দুসারের শাসনকালে যুদ্ব করেছিল তক্ষশীলা।

৩। ভারতের স্বাধীনতা ও সুশঠ দেশ প্রিচালনা

এরপর বিন্দুসার মৃত্যুরপর অশোক মৌর্য সম্রাজ্য সামলায় এবং তিনি একমাত্র রাজা যে একসাথে ১৬ টি মহাজনদ দখল করে। অশোকে সময়কালে শিলালিপির প্রয়োগ অনেক বেড়ে যায়। ১৭৫০ সালে প্রথম অশেকের শিলালিপি পাওয়া যায়।এই শিলালিপিটি পেয়েছিল তার নাম ছিল ফ্যান থে লার।১৮৫৭ সালে জেমস প্রিন্সেপ এই শিলালিপির পাঠোদ্বার করে। অশোক প্রথমে জৈন ধর্মের ছিলেন।এরপর তিনি বোদ্ব ধর্মে ফিরে আসে।

এরপর অশোক দেব নাম প্রিয় নামে পরিচিতি লাভ করে।মৌর্য বংশের শেষ শাসক ছিল বৃহদ্রথ।এরপর রাজ্যতে আসে শুঙ্গ বংশ।এই বংশ প্রতিষ্ঠিত করে পুষ্যমৃত্র শুঙ্গ।এরপর আসে সাতবাহন বংশের শেষ রাজা ছিলেন সাতকর্নী।এরপর শাসন এ আসে গুপ্ত বংশ।এরপর থেকে শুরু হয় গুপ্ত বংশের শাসন।গুপ্ত বংশের যুগকে ভারত বংশের স্বর্নযুগ বলা হয়।শ্রী গুপ্ত সিংহাসনে বসে ৬ খানা মহাজনপদ দখল করেছিল।

এরপর শ্রী গুপ্ত মৃত্যু হয়।এরপর সিংহাসনে বসে ঘটৎকচ।এর মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসে প্রথম চন্দ্র গুপ্ত।তারপর তার ছেলে সমুদ্রগুপ্ত রাজা হয়।

সমুদ্রগুপ্তকে ভারতের নেপলিয়ন বলা হতো।সমুদ্রগুপ্তর পর দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত। ভারতের প্রথম রূপৌমুদ্রা চালু করে এই দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত। তারপরে শাসন করে কুমার গুপ্ত।

কুমারগুপ্তর শাসনকালে নালন্দা ইউনিভার্সিটি স্থাপন করে।কুমার গুপ্তর পর স্কন্দগুপ্ত রাজা হয়।তার আমলে বেশি কৃত্রিম ঝিল নির্মান করেছিল।স্কন্দগুপ্তর শেষ শাসক ছিলেন ভানু গুপ্ত। ভারতের মোট বেদের সংখ্যা হচ্ছে চারটি। বেদ অর্থ বিদ্যা।ভারতের সংগীতের জনক বল

Leave a Comment