ইলেকট্রনিক্স টিউটোরিয়াল -১ এর মাধ্যমে আমরা ইলেকট্রন, ইলেকট্রনিক্স ও এর অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ, পরিবাহী ইত্যদি বিষয় সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি । ইলেকট্রনিক্স টিউটোরিয়াল-২ এর মাধ্যমে আমরা পরমাণুর গঠন, বিদ্যুৎ প্রবাহ ও পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে ইলেকট্রনের প্রবাহ সম্পর্কে জানার চেস্টা করব।
পরমাণুর গঠন:
আমরা জানি যে পরিবাহী তথা যে কোন পদার্থই অসংখ্য পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত। আবার পরমাণু ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন দ্বারা গঠিত। পরমাণুতে ধনাত্নক চার্জ বিশিষ্ট প্রোটন ও চার্জ বিহীন নিউট্রন পরমাণুর নিউক্লিয়াস তথা পরমাণুর কেন্দ্র গঠন করে। অন্যদিকে প্রোটনের চার্জের সমান সংখ্যক ঋণাত্নক চার্জ বিশিষ্ট ইলেকট্রন পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বাইরে অবস্থান করায় পরমাণু বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ থাকে। পরমাণুতে ইলেকট্রন সমূহ স্থির থাকে না বরং নিউক্লিয়াসের বাইরে কতগুলো সুনিদ্ধিষ্ট উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সর্বদা ঘূর্ণায়মান থাকে। ফলে বহ্যিক শক্তির প্রভাবে এক বা একাধিক ইলেকট্রন লাফ দিয়ে অন্য কক্ষে প্রবেশ করতে পারে এমনকি নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ ছিন্ন করে মুক্ত ভাবেও বিচরণ করতে পারে। আর একারণেই পৃথিবীতে পদার্থের মধ্যদিয়ে বিদ্যুৎ পরিবহণ সম্ভব হয়েছে।
পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে ইলেকট্রনের প্রবাহ:
পরিবাহী পদার্থসমূহে ভ্যলেন্স ব্যন্ড, কন্ডাকশন ব্যন্ড ও ফরবিডেন এনার্জি গ্যাপ নামে তিনটি এনার্জি ব্যন্ড থাকে। মূলত পরমানুর ভ্যালেন্স ইলেকট্রন তথা সর্ববহিস্থ কক্ষপথের ইলেকট্রন সমূহ নিয়েই ভ্যলেন্স ব্যন্ড গঠিত হয়। আর এই সকল ভ্যলেন্স ইলেকট্রন সমূহ পরমানুর নিউক্লিয়াসের সাথে দুর্বল আকর্ষণ বল দ্বারা যুক্ত থাকে। যখন কোন বিদ্যুৎ উৎস বা ব্যটারীর সাথে পরিবাহীকে সংযুক্ত করে তার দুই প্রান্তে বিভব পার্থক্য সৃষ্টি করা হয়, তখন ঐ শক্তির প্রভাবে এক বা একাধিক ইলেকট্রন ভ্যলেন্স ব্যন্ড হতে নিষ্ক্রান্ত হয়। ফলে এই ইলেকট্রন সমূহ নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ মূক্ত হয়ে চলাচল শুরু করে।এ অবস্থায় এই মুক্ত ইলেকট্রন সমূহ যে এনার্জিব্যন্ড গঠন করে তাই কন্ডাকশন ব্যন্ড। আর ভ্যলেন্স ব্যন্ড ও কন্ডাকশন ব্যন্ডের মধ্যবর্তী স্থানে যে এনার্জি গ্যপ বা ফাকা স্থান থাকে তাকেই ফরবিডেন এনার্জি গ্যাপ বলে। এই গ্যাপ কুপরিবাহী পদার্ধে অনেক বেশি থাকে আর অতি পরিবাহি বা সুপরিবাহী পদার্থে তাকে না।
আমরা ইতোপূর্বে জেনেছি যে ইলেকট্রন ঋণাত্নক চার্জ বিশিষ্ট কণিকা। একটি ঋণাত্নক চার্জ বিশিষ্ট ইলেকট্রন ভ্যলেন্স ব্যন্ডে অবস্থানকালে শক্তি অর্জন করে লাফ দিয়ে যখন কন্ডাকশন ব্যন্ডে গমন করে তখন ভ্যলেন্স ব্যন্ডে একটি ফাকা স্থানের সৃষ্টি হয় যাকে হোল বলে। যেহেতু হোল ঋনাত্নক চার্জের শূন্যতার কারনে সৃষ্টি হয় তাই হোলের চার্জ ধনাত্নক হয়। আবার ঋণাত্নক চার্জ ধনাত্নক চার্জকে আকর্ষণ করে বলে হোল সৃষ্টির সাথে সাথেই পার্শবর্তী পরমাণুর ইলেকট্রন, সৃষ্ট হোল বা ইলেকট্রনের শূণ্যতার কারনে সৃষ্ট গর্তকে পূরণের চেষ্টা করে,আর এভাবেই হোল বা ধনাত্নক চার্জ পরিবাহীর ভ্যালেন্স ব্যান্ডে এক পরমাণু থেকে পার্শবতী পরমাণুতে গমনের মাধ্যমে পরিবাহীর একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে প্রবাহিত হয়। পক্ষান্তরে ইলেকট্রন সমূহ কন্ডাকশন ব্যান্ডের মধ্যদিয়ে হোল প্রবাহের বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয়। মূলত হোলের প্রবাহই বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক নির্দেশ করে , আর এ জন্যই বলা হয় ইলেকট্রনের প্রবাহের বিপরীত দিকে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়।
আপনি একটি টিউটরিয়ালের জন্য যত পরিশ্রম করেন তেমন পরিশ্রম করতে কাউকে দেখি নি। আমি নিজেও এভাবে সাজিয়ে লিখতে পারি না।
বিদ্যুত প্রবাহের পদ্ধতি আর কারন সম্পর্কিত এত সহজে প্রকাশ করেছেন-অবাক হলাম। ইলেক্ট্রন আর প্রোটনগুলো নিউক্লিউয়াসে কিভাবে থাকে? ইলেক্ট্রন আর প্রোটনের সঙ্খার ভিত্তিতে পরমানুর গঠন আর রাসায়নিক বিক্রিয়ার বিদ্যুতের সৃষ্টি সম্পর্কে পরের কোন টিউটরিয়ালে আশা করছি।
টিউটো ভাই ধন্যবাদ। আসলে আপনার এই প্রেড়নাগুলোই আমাকে শক্তি যোগায়। ব্যস্ততার কারণে মাঝে মাঝে মনে হয় যে হয়তবা আমি আরও ভাল কিছু দিতে পারতাম,পারছিনা। আপনার কথায় ভরসা পেলাম।
আপনার সুচিন্তিত নির্দেশনাগুলো মাথায় রাখলাম।
Pingback: বাংলা টিউটরিয়াল|বাংলা ভাষায় বিশ্বের প্রথম টিউটরিয়াল সাইট | Bangla Tutorials » Blog Archive » ইলেক্ট্রনিক্স টিউট
খুব ভালো ভাবে বুঝিয়েছ ।ধন্যবাদ ।
Assalamualikum bhaiya apnr tutorial pore khub valo laglo…bhaiya multimeter ar babohar niye jodi likhten khub opokar hoto…