ত্বকের যৌবন ফেরাতে ৭ টি প্রাকৃতিক পদ্ধতি

বয়স বাড়ার সাথে সাথেই আমাদের ত্বক রুক্ষ হতে থাকে। আগের মতো মোলায়েম থাকে না। বেশি বয়স হলে একেবারে ঢিলে হয়ে যায় ত্বক। এটাই স্বাভাবিক পরিবর্তন।

কিন্তু আমাদের কারো কারো জীনবন-যাত্রার পদ্ধতি আমাদের বয়সের আগেই ত্বকের কোমলতা চলে যেতে পারে। বেশি সময় সূর্যের আলোতে কাজ করা, ধুমপান, রোগবালাই, আঘাত, বায়ু দুষণ এবং উল্টা-পাল্টা খাওয়া দাওয়ার কারনেও ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অনেক টাকার কসমেটিক বা কসমেটিক সার্জারী করেও অনেকের জন্য ভাল ফল বয়ে নিয়ে আসে না। এখানে কয়েকটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি লেখা হয়েছে যা একেবারেই সহজ লভ্য।

Image by Robert-Owen-Wahl from Pixabay

[tutoadsense]

১. লেবুঃ

লেবু দারুন এক খাবার। টক ও ঘ্রণের সাথে অনবদ্য এক ফল যা যে কোন খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়। হাজার হাজার বছর আগে থেকে গলায় সমস্যা, পেটে সমস্যা, জ্বর, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে।

[tutosubscribe]

লেবুতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি একসাথে আছে। লেবুতে আছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ফোল্যাট, নিয়াসিন, রিবোফ্লাভিন, প্যানটোথেনিক এসিড, জিন্ক, ফসফরাস, কপার, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং প্রোটিন।
প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য দারুনভাবে ব্যবহার করা হয়। ধুমপান বা আল্ট্রাভায়োলেট রশনির কারনে ত্বকের ক্ষতি হলে তা সারিয়ে তোলতে দারুন কাজ করে লেবু। লেবু এন্টি অক্সিডেন্ট হওয়ার কোন বাজে পদার্থও নিঃস্মরনে সাহায্য করে।
নিয়মিত লেবুর সরবত খেলে এবং লেবু টুকরা করে শুধু মাত্র মুখমন্ডলে ঘষা দিলেই চলবে। লেবুর টুকরায় এক দুই ফোটা মধুও মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও লেবুর রস গরম পানিতে মিশিয়ে সুতি কাপড় দিয়ে শরীরের ত্বক মুছেও দেওয়া যেতে পারে।

Image by Seksak Kerdkanno from Pixabay

[tutoadsense]

২. শসাঃ

শসায় রয়েছে ভিটামিন কে, প্যানটোথেনিক এসিড, ভিটামিন সি, পাটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, বায়োটিন ও ফসফরাস। শসায় রয়েছে সিলিকা যা শরীরের গুরুত্বপূর্ণ টিস্যু যেমন মাসলস, চুল, নখ ও ত্বকের জন্য কাজে লাগে।
প্রচুর পরিমান শসা খাওয়া আমাদের ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। চাক চাক করে শসা কেটে শরীর ঘষে দেওয়া যেতে পারে। ব্লেন্ড করেও ত্বকে দেওয়া যেতে পারে।
শসা, টকদই ডিমের সাদা অংশ, মধু এবং লেবুর রস মিলিয়ে ত্বকে লাগালে প্রকৃতিক সৌন্দর্য ফিরে আসবে।

Image by Elba Cabrera from Pixabay

[tutoadsense]

৩. পেপেঃ

সারা পৃথিবীতেই পেপে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ফল। বাংলাদেশসহ এশিয়াতে অনেক আগে থেকেই পেপে চাষ হয়। রসালো এবং মজাদার পেপে দারুন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।

পেপেতে রয়েছে ভিটামিন সি, ফোলেট, ভিটামিন এ, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, কপার ও প্যানটেথেনিক এসিড। এটি কোলন ক্যান্সার সারায়। এটি দারুন এন্টি অক্সিডেন্ট। কোলেস্টরল জমতে বাধা প্রদান করে।

পেপেতে ইউনিক এনজাইম আছে যা অন্য কোথাও পাওয়া দুষ্কর। এটি এজমা রোগীর জন্যও ভাল পথ্য।

এটি শুধু শরীরের ভিতরেরই না ত্বকেরও উপকারী। কালো দাগ দূর করতে খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারেন। দুই চামচ পেপের সাথে এক চামচ লেবুর রস ও আধা চামচ মধু মিশিয়ে চেহারায় মাখতে পারেন। এক সপ্তাহ ব্যবহারে কোমল ত্বক ফিরে পাবেন।

Image by Alexas_Fotos from Pixabay

[tutoadsense]

৪. কলাঃ

দামে সস্তা, সব সময় পাওয়া যায়, সহজে খাওয়ার মতো দারুন খাবার কলা। প্রচুর পরিমান এশিয়াতে ফললেও সারা বিশ্বেই সারা বছর কলা পাবেন। পরিপাকের জন্য দারুন খাবার কলা, ওজন ঠিক রাখতেও কলা ভুমিকা পালন করে।

প্রচুর আশ আছে কলায়। শিশুদের প্রথম ফল কলা। ভিটামিন বি৬ ও সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে কলায়। কলা খেলে কার্ডোভাস্কুলার টিস্যু ভাল থাকে, উচ্চ রক্তচাপ কমায়।

ত্বকের ক্ষতি থেকে বাচাতে সাহায্য করে কলা। তেল তেলে ত্বক, কালো বা সাদা হয়ে যাওয়া দাগ ইত্যাদি দুর করতে সাহায্য করে।

কলার সাথে অন্যান্য উপাদান মিক্স করে ত্বকে লাগালে ভাল উপকার পাওয়া যায়।

Image by S. Hermann & F. Richter from Pixabay

[tutoadsense]

৫. কমলাঃ

কমলা সারা বিশ্বেরই পরিচিত একটি ফল। মালটা. কমলা ও লেবু একই গোত্রভূক্ত এবং কাছাকাছি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি রয়েছে কমলায়। এছাড়াও কমলায় আশ রয়েছে যা আমাদের পরিপাকের জন্য উপকারী। রয়েছে ভিটামিন বি১, ফোলেট, কপার, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও প্যানটোথেনিক এসিড।

কমলা খাওয়া যেমন উপকারী, কমলার খোসা খাওয়াও তেমনই উপকারী। আমরা সাধারণত খোসা ফেলে দেই, কিন্তু কমলার খোসায় আরো বেশি ভিটামিন সি উপস্থিত আছে। বেশ কিছু কমলার খোসার রেসিপি পাবেন যাতে মজা করে খোসা খাওয়ার পদ্ধতি দেওয়া আছে। বাংলাদেশের বাজারে কমলার খোসার জেলী কিনতে পাওয়া যায়।

প্রতিদিন কমলা খেলেও ত্বকের জন্য ভাল। আর কমলার খোসা দিয়ে মাস্ক বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে। খোসার ভিতরের সাদা অংশ ফেলে দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। তারপর শুকিয়ে পাউডার বানিয়ে নিন। লেবুর রস, টকদই, মধুর সাথে মিক্স করে বানিয়ে নিতে পারেন স্কার্ব।

Image by Bonbonga from Pixabay

[tutoadsense]

৬. গ্রীন টিঃ

গ্রীন টি কে পৃথিবীর সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর পানীয় মনে করা হয়। চীন, বাংলাদেশ এবং এশিয়ার কিছু দেশে এটি ব্যাপকভাবে চাষ হয়। এই চা এর প্রচলন চীনে শুরু হলেও সারা বিশ্বে এখন এই পানিয় ব্যাবহার ও সমাদৃত হচ্ছে।

শরীরের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা সারাতে যে উপাদান লাগে তা উৎপাদনে ভুমিকা রাখে গ্রীন টি। এটি এন্টিঅক্সিডেন্ট, আমাদের শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। হার্টের সমস্যা দূর করে, ক্যান্সার সারায়, ব্লাড প্রেসার ঠিক রাখে।

ডায়াবেটিকসের সম্ভাবনা কমায়, লিভার ভাল রাখে। এটি ত্বককে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক সারায়।

দুই টেবিলচামচ গ্রীন টি ও আধা চামচ লেবুর রস মিলিয়ে নিন। এটি চেহারায় ১৫ মিনিট রাখুন। সাথে মধু মিশিয়ে ত্বকে দিলে ত্বক না শুকানো পর্যন্ত রাখুন। এটি ত্বককে কোমল রাখবে, নষ্ট কোষকে সজীব করতে সহায়তা করবে।

ছবিঃ বিডিনিউজ

[tutoadsense]

৭. টক দইঃ

আদি কাল থেকে মিস্টান্ন হিসেবে আমাদের দেশে দই বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে খাবারের পরে দই খাওয়ানোর রেওয়াজও চালু আছে। এটি শুধু রেওয়াজই না – খাবারের পর দই কিন্তু আমাদের পরিপাকের জন্য বেশ উপকারীও।

মূলতঃ ঘন দুধকে ব্যাক্টেরিয়ার ( Lactobacillus bulgaricusStreptococcus thermophilus. ) মাধ্যমে দইয়ে পরিনত করা হয়। এটি তখন আরো ঘন হয়, হালকা টক ও দারুন ঘ্রাণের হয়।

দইয়ে আছে প্রচুর প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, কাবোর্হাইড্রেড, ভিটামিন বি১২, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও রিবোফ্লাভিন। এটিতে ল্যাকটিক এসিড ও আলফা হাইড্রোক্সি এসিড আছে। তাই এটি মৃত কোষকে জীবন্ত করতে সাহায্য করে।

উপরের উপাদানগুলোর সাথে ইতিমধ্যে টক দইয়ের ব্যবহার বলা হয়ে গেছে।

According to medical-news.org Post

Leave a Comment