কোস্টকাঠিন্য ও পাইলস সম্পর্কিত ১৭ টি ডাক্তারী তথ্য

অনিয়মিত খাওয়া দাওয়া ও জীবন যাপনের ফলে যে সব রোগ হয় তার মধ্যে কোস্ট কাঠিন্য একটা। পরিবারের সাথে না থাকায় রেস্টুরেন্ট এবং হোটেলের রান্নায় খুব কম পরিমান শাক ও শব্জি খাওয়া হয়। আর বেশি খাওয়া হয় মাছ ও মাংস। যারা ফাস্টফুড দিয়েই লাঞ্চ করে ফেলেন, যারা অনেক বেশি পার্টিতে অংশগ্রহণ করেন তাদেরও মাংস খাওয়া হয় অনেক অনেক বেশি। ফলে পায়খানা শক্ত হয়। পাইলস রোগ হওয়ার প্রাথমিক পর্যায় হলো শক্ত পায়খানা হওয়া এবং পায়খানা করতে কষ্ট হওয়া।

আমার নিজের এই রোগ থাকায় এবং অনেক দিন এই রোগ বহন করায় আমি নিজে বেশ কয়েকজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছি এবং অনেক পড়ালেখা করেছি তার মাধ্যমে পোস্টটি লেখা।

Hemorrhoids বা অশ্বরোগ সম্পর্কিত ২০ টি তথ্য জেনে নেই যা হয়তো আমাদের জীবন যাপনের পদ্ধতি পাল্টে দিবে।

১. কোস্টকাঠিন্যই (constipation) অশ্ব বা পাইলস ( Hemorrhoids ) না

আঁশযুক্ত খাবার না খেলে বা পানি কম খেলে বা বিভিন্ন কারনে পায়খানা শক্ত হতে পারে এবং বেশি সময় পরে পায়খানা হতে পারে বা পায়খানা হতে কষ্ট হতে পারে। কখনো বা শক্ত পায়খানা হলে পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্তও বের হতে পারে নাও হতে পারে। এটাকে কোস্ট কাঠিন্য বলে।

ধারাবাহিকভাবে রক্ত বের হলে কখনো পায়খানার রাস্তায় ভিতরে বা বাইরে ছোট ছোট নল বের হতে পারে। এই পর্যায়কে অশ্ব বা পাইলস বা Hemorrhoids বলে। সাধারনতঃ কোস্টকাঠিন্যের সমস্যা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।

২. বয়স ও ওজন বাড়ার সাথে সাথে অশ্ব রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে

৪৫ বছর বয়সের পরে অনেক বেশি পরিমান এই রোগের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। প্রায় অর্ধেক রুগিই এই বয়সের পরে দেখা গেছে। বেশি ওজনের ব্যক্তিদের মধ্যে এটি বেশি দেখা গেছে।

৩. প্রেগনেন্ট অবস্থায় কোস্ট কাঠিন্য হতে পারেঃ

প্রেগনেন্ট অবস্থায় কোস্ট কাঠিন্য হতে পারে। পেট বড় হয়ে যাওয়া কখনো পায়খানা করতে কস্ট হতে পারে। আর এই সমস্যা বেশিভাগ সময়ই অস্থায়ী। ভাল খবর হলো কোস্ট কাঠিন্য হলে মায়ের ও সন্তানের সমস্যা না হবে না। ডাক্তার প্রচুর পানি পান করতে বলে।

৪. বেশি পরিমান শাক সব্জি খাওয়া

বেশি পরিমান শাক ও সব্জি খাওয়াকে প্রাধান্য দিতে হবে। শাক ও সব্জির বড় অংশই শরীর থেকে বেবিয়ে যায় আর অনেক বেশি পরিমান পানি ধারণ করে। প্রতি বেলা খাবারেই কিছু পরিমান শাক বা সব্জি রাখা কোস্ট কাঠিন্য কমিয়ে দিবে।

৫. বেশি সময় বসে থাকলে অশ্ব রোগ হতে পারে

অনেক বেশি সময় বসে থাকলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। পায়খানায় গিয়ে বেশি সময় বসে থাকলেও এটা হতে পারে। অনেক বেশি সময় অফিসের চেয়ারে বসে কাজ করা ব্যক্তিদের অশ্ব হতে পারে। কখনো বা কাজের ব্যস্ততায় টয়লেটে যেতে দেরীও হয় এ কারনে টয়লেটে গিয়ে হঠাৎ অনেক বেশি চাপ পড়ে।

৬. ভারী জিনিস বহনে হতে পারে

ভারী জিনিস বহন করা ব্যক্তিদের কোস্ট কাঠিন্য হতে পারে।

৭. জেনেটিক কারনে অশ্ব হতে পারে

বাবা বা মায়ের কোস্ট কাঠিন্য হলে সন্তানের হতে পারে। বাবা বা মায়ের জেনেটিক কারনে কোস্ট কাঠিন্য হলে সন্তানদের শিশু বয়স থেকেই সাবধান রাখা ও খাদ্যাভ্যাস ঠিক করা উচিৎ।

৮. ইসব গুলের ভূসি

ইসুবগুলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামাইনো এসিড ও আঁশ যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে দারুণ উপকারী। কোষ্ট কাঠিন্য দূর করতে প্রতিদিন তিনবার খাওয়ার পর খেতে হবে। ইসবগুলের ভুসি অল্প পানিতে এক চামচ মিশিয়ে সাথে সাথে খেয়ে ফেলতে হবে। ভিজিয়ে রাখা যাবে না।

ভিজিয়ে রাখলে ইসবগুলের ভুসির কার্যকারিতা থাকবে না। ভুসি খাবারের সাথে মিশে গিয়ে খাবারে আশযুক্ত করবে এবং মলকে নরম করবে।

৯. ফল-মূল খাওয়ার অভ্যাসঃ

সকালের নাস্তায় কলা বা যে কোন ফল সাথে রাখা যেতে পারে। দুপুর ও বিকেলেও ফল খাওয়ার অভ্যাস করা উচিৎ। আমরা সাধারনতঃ বিকেলের নাস্তায় স্পাইসি বা ভাজা পোড়া পছন্দ করি। প্রতি বেলা খাবারে হয় ফল অথবা শাক মেনুতে থাকতে হবে। উল্লেখ্য ফলের জুসে আশ বাদ দিয়ে দেওয়া হয় তাই জুস না খেয়ে সরাসরি ফল খেলে বেশি আশ গ্রহণ হবে।

১০. বেশি মাংশ খেলে বেশি শাক খান

কোন অনুষ্ঠানে বা বাসায় যেদিন গোস্ত রান্না হবে সেদিন বেশি শাক খান বা ফল খান। এটা কোস্ট কাঠিন্য না হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়। আর যাদের ইতিমধ্যে কোস্ট কাঠিন্য রয়েছে তাদের পরিমিত পরিমান গোস্ত খাওয়া উচিৎ সাথে প্রচুর পরিমান শাক, সব্জি বা বেশি আশ সমৃ্দ্ধ খাবার।

১১. পায়খানা ধরার সাথে সাথে যেতে হবে

অনেকে পায়খানা ও প্রসাবে দেরী করে। দির্ঘ্য সময় পরে পায়খানা করলে এক সাথে প্রচুর বেগ আসে এবং নিচের অংশে বেশি চাপ পরে যেতে পারে এবং ক্ষত সৃষ্টি হয়ে রক্ত বের হতে পারে।

১২. হাটাহাটি

নিয়মিত প্রচুর হাটাহাটি করা বিভিন্ন কারনে উপকারী। হাটার ২৫ উপকারের তালিকা তৈরী করেছিলাম তা দেখতে পারে। নিয়মিত হাটাহাটি কোস্ট কাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। শরীরের রক্ত প্রবাহ এবং বিভিন্ন হরমোন এবং হজমে সহযোগি রসের মাত্রা ঠিক রাখে ফলে মল নরম থাকে। নিজের অংশে বেশি চাপ পরে না।

১৩. হালকা ব্যায়াম করা

হালকা ব্যায়াম কোস্ট কাঠিন্যের সম্ভাবনা কমায়।

১৪. সিম ও বাদাম খান

প্রতি ১০০ গ্রাম সিমে ১৬ গ্রাম আঁশ রয়েছে। বাদাম

১৫. পর্যাপ্ত পানি খান

পর্যাপ্ত পানি না খেলে কোস্ট কাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

১৬. কখনো অপারেশন করতে হতে পারে

১৭. আশ যুক্ত খাবারের তালিকা

https://www.webmd.com/digestive-disorders/best-worst-foods-hemorrhoids#2

https://www.medicalnewstoday.com/articles/73938.php

https://www.everydayhealth.com/news/six-easy-ways-prevent-hemorrhoids/

https://www.healthline.com/nutrition/22-high-fiber-foods#section1

https://www.everydayhealth.com/hemorrhoids/guide/pregnancy/

Leave a Comment