সারভার কেনার আগে যা জানা প্রয়োজন

সারভার কেনার আগে আপনাকে জানতে হবে আপনি কেমন সারভার কিনবেন? আর সেটা জানার আগে আরো জেনে নিবেন আপনি কি ধরনের সার্ভিসের জন্য সারভার কিনছেন।

আমি নিচে তিন টি ভাগ করলাম-

  • ১. মেইল সারভার, ওয়েব সারভার
  • ২. এপ্লিকেশন বা ডাটাবেজ সারভার, লোকাল অফিস সফটওয়্যার সারভার
  • ৩. ফাইল সারভার বা ব্যাকআপ সারভার

যদি আপনার সারভার ৩৬৫ দিন চলতে হয়। এক মিনিটের জন্যও থামতে পারবে না এমন সারভার কিনতে হলে আপনাকে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো দেখতে হবে।

১. রিডানডেন্ট পাওয়ার সাপ্লাই।

হট প্লাগ পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট

ডেক্স কম্পিউটার আমি সবচেয়ে বেশি নষ্ট হতে দেখেছি পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট। একটি পাওয়ার সাপ্লাই নষ্ট হলে যাতে আরেকটি ব্যাকআপ দিতে পারে সে জন্য কিছু সারভারে আপনি পেয়ে যাবেন রিডানডেন্ট পাওয়ার সাপ্লাই। আবার এই পাওয়ার সাপ্লাই হবে হট প্লাগ-এমনটা আপনি পছন্দ করবেন। তার মানে একটি পাওয়ার সাপ্লাই নষ্ট হলে গেলে আপনি নতুন পাওয়ার সাপ্লাই কিনে লাগিয়ে নিতে পারবেন সারভার বন্ধ করা ছাড়াই।

এই ভিডিওটিতে দেখতে পাবেন কিভাবে হট প্লাগ পাওয়ার সাপ্লাই পরিবর্তন করা হয়।

২. হার্ডওয়্যার রেইড

হার্ডডিস্ক যে কোন সময় ফেল করা বা ডাটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়মিত ভাবেই হচ্ছে। কিন্তু আপনি কিভাবে পরিত্রান পেতে পারেন? অবশ্যই রেইডের মাধ্যমে। সারভার কিনে থাকলে আপনি অবশ্যই রেইড কার্ড রয়েছে এমনটা কিনবেন।

রেইড-০,১,১০,৫ বা ৬ কনফিগার করা যায় অনায়াসে। আমি সাজেস্ট করি রেইড ১০ ব্যবহার করতে এ বেপারে আরও ধারণা পেতে আমার নিচের ভিডিও দেখে নিতে পারেন।

অনেক সারভারের স্পেসিফিকেশনে সফটওয়্যার রেইডের কথা উল্লেখ থাকে। আসলে এটি উল্লেখ থাকার মতো বিষয়ই না। কারন যে কোন কম্পিউটার বা সারভারেই রেইড পার্টিশন করে আপনি সফটওয়্যার রেইড করতে পারেন। এতে আপনার কম্পিউটার আরো স্লো হবে কারন আপনার প্রসেসরই রেইড এর কাজটি করবে।

৩. হট প্লাগ হার্ডডিস্ক ব্লক

হট প্লাগ হার্ডডিস্ক ট্রের মাধ্যমে কোন হার্ডডিস্ক নষ্ট হলে তা পরিবর্তন করতে আপনাকে কম্পিউটার বন্ধ করতে হবে না। বিভিন্ন সারভারে বিভিন্ন সংখ্যক হার্ডডিস্ক ট্রে রয়েছে। কোন হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়ে গেলে বা হার্ডডিস্কটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বুঝতে পারলে আপনি সারভার ডাউন না করেই হার্ডডিস্ক পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। ছবি সূত্র

৪. ল্যান পোর্ট

কম্পিউটারের উনপুট আউটপুট, ডিসপ্লে ইত্যাদি নিয়ে কাজ করলেও। সারভারে এগুলো খুব কমই কাজে লাগে। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় ল্যান পোর্ট। অনেক অনেক ইউজার কানেক্ট থাকে ল্যান পোর্টের মাধ্যমেই। একধিক ল্যানপোর্ট আপনাকে একই সাথে অনেকগুলো আইপি নিয়ে কাজ করতে এবং দ্রুত তথ্য আদান প্রদানে সুবিধা দিবে। আবার যদি কখনো একটি ল্যানপোর্ট নষ্ট হয়ে যায়- বা ডিসকানেক্ট হয়ে যায় তাহলেও কানেক্ট থাকতে পারবেন। কোন কোন সারভারে চারটি বা তার বেশিও ল্যান পোর্ট থাকে।

৫. Remote Access Port (iDRac or ILO পোর্ট)

বিভিন্ন সারভার বিভিন্ন ধরনের রিমোট একসেস এর ব্যবস্থা করে। স্বল্প কথায়, এই পোর্টে একটি আইপি দিয়ে আপনি সিস্টেম বায়োসে ঢুকতে পারবেন। কোন কারনে সারভারের হার্ডড্রাইভ নষ্ট হলে বা সারভারের যে কোন সমস্যায় যদি সিস্টেম এর কোন অংশ রান নাও করে তবুও আপনি বায়োসে ঢুকে চেক করতে পারবেন কি সমস্যা হয়েছে।

আপনি যদি দূর থেকে সারভার নিয়ন্ত্রণ করেন তাহলে KVM সুইচ এর সাথে এই পোর্ট যুক্ত থেকে আপনি আইপি দিয়ে এবং ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।

যদিও সব সারভারে এটি থাকে না -তবে আপনি দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে অবশ্যই এই ফিচারসহ সারভার কিনবেন। Dell এটিকে iDRAC আর HP এটিকে ILO বলে।

৬. প্রয়োজন ও উপযোগিতা অনুসারে সারভারঃ

  • আপনার সারভারে যদি খুব বেশি স্পেস দরকার না হয় এবং আপনার যদি ইউজার অনেক অনেক বেশি এবং প্রসেসরের উপর লোড বেশি হতে পারে সেক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই SSD ব্যবহার করবেন। অনেক বেশি সংখ্যক হার্ডডিস্ক না কিনে দুটি SSD আপনাকে ভাল পারফরমেন্স দিবে।
  • আপনি যদি ফাইল সারভারের তৈরীর জন্য সারভার কিনতে চান তাহলে আপনাকে আমার পরামর্শ র‌্যাক মাউন্ট না কেনা। টাওয়ার সারভার যেটাতে অনেক বেশি ড্রাইভ বে আছে যেমন- Dell T330 কেনা। অবশ্যই রেইড কার্ড যাতে থাকে এবং অধিক ল্যান পোর্ট থাকে তেমনটা পছন্দ করবেন।
  • একাধিক সারভার মিলে যেখানে কাজ করে যেমন- লোড ব্যালেন্স সারভার বা মিরর সারভার সেক্ষেত্রে আপনি কনফিগারেশনে কম্প্রোমাইজ করতে পারেন।

সারভার বিষয়ক আমার আরো লেখাঃ

সারভার রুমের পরিবেশ

কোন ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য কোন ধরনের সারভার দরকার

ডোমেইন হোস্টিং টিউটোরিয়াল

Leave a Comment